পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পাঠ কুওলিনী। আত্মাকে জড় ব’লে জানলে চলবে না, তার যথার্থ স্বরূপ জানতে হবে। আমরা আত্মাকে দেহ ব’লে ভাবছি, কিন্তু একে ইঞ্জিয় ও চিন্তা থেকে পৃথক্ ক’রে ফেলতে হবে ; তবেই আমরা উপলব্ধি করতে পারবে৷ যে, আমরা অমৃতস্বরূপ । পরিবর্তন মানেই কার্যকারণের দ্বৈতভাব ; আর যা কিছু পরিবর্তনশীল, তাই নশ্বর। স্বতরাং দেহ বা মন অবিনাশী হতে পারে না, কেন না তারা সর্বদা পরিবর্তনশীল। যা অপরিবর্তনীয়, একমাত্র তাই অবিনাশী ; কারণ তার উপর ক্রিয় করতে পারে, এমন আর কিছু নেই। আমরা তৎ-স্বরূপ হয়ে যাই না, চিরকালই আমরা সেই সত্যস্বরূপ। কিন্তু যে অজ্ঞানের অবগুণ্ঠন আমাদের কাছ থেকে সত্যকে লুকিয়ে রেখেছে, তা সরিয়ে দিতে হবে। দেহ হচ্ছে চিস্তার বাহ বন্ধগত রূপ। সূর্ব ( পিঙ্গল) চন্দ্রের (ঈড়া) গতি দেহের সর্বাংশে শক্তিসঞ্চার করছে ; . অবশিষ্ট শক্তি মেরুদণ্ডের ( স্থযুম্নার) অন্তর্গত বিভিন্ন চক্রে—সাধারণ ভাষায় । স্বায়ুকেন্দ্রে সঞ্চিত থাকে। এই গতিগুলি মৃতদেহে দেখা যায় না, কেবল . স্বস্থ সবল শরীরেই থাকে । - যোগীর এই স্থবিধা—তিনি যে শুধু এগুলি অহুভব করেন তা নয়, সত্য সত্যই এগুলি দেখতেও পান । এগুলি প্রাণবস্ত, জ্যোতির্ময় ; চক্রগুলিও ঠিক তাই । কার্য সাধারণতঃ চেতন ও অচেতন—এই দুই প্রকার। যোগীদের আর এক প্রকার কর্ম আছে, সেটি অতিচেতন ; এইটিই হচ্ছে সর্বদেশে সৰ্বকালে সমস্ত আধ্যাত্মিক জ্ঞানের মূল উৎস। সহজাত জ্ঞানের ক্রমবিকাশই আমাদের পূর্ণতার দিকে নিয়ে যায়। অতিচেতন অবস্থায় কোন ভূল হয় ন ; কিন্তু সহজাত জ্ঞান পূর্ণতা প্রাপ্ত হলেও তা নিছক যান্ত্রিক, কারণ এ স্তরে সজ্ঞান ক্রিয়া থাকে না । একে ‘প্রেরণা’ বলা হয়ে থাকে। কিন্তু যোগীরা বলেন, ‘এই শক্তি প্রত্যেক মামুষেরই মধ্যে আছে’, কালে সকলেই এই শক্তির অধিকারী হবে। চঞ্জ ও স্বর্ষের (ঈড় ও পিজলা ) গতিকে একটা নতুন দিকে নি যেতে হবে, অর্থাৎ মেরুদণ্ডের মধ্য দিয়ে তাদের জন্য একটা নতুন পথ খুলে