পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>○ケ স্বামীজীর বাণী ও রচনা না, কল্পনার চক্ষে সেগুলি কেবল সাক্ষীর মতো দেখে যাও—কেমন ক’রে তারা ভেসে চলেছে। একটা পুকুরে ঢ়িল ছুড়লে যেমন প্রথমে খুব ঘন ঘন তরঙ্গ ওঠে, তারপর তরঙ্গের পরিধি যত বেড়ে যায়, তরঙ্গ তত কমে আসে ; তেমনি মনকে ঐভাবে ছেড়ে দিলে তার চিন্তার পরিধি যত বেড়ে যাবে, মনোবৃত্তি তত কমে আসবে। কিন্তু আমরা এই প্রণালী উণ্টে দিতে চাই । প্রথমে একটা চিন্তার বড় বৃত্ত থেকে আরম্ভ ক’রে সেটাকে ছোট করতে করতে যখন মন একটা বিন্দুতে আসবে, তখন তাকে সেখানে স্থির ক’রে রাখতে হবে। এই ভাবটি ধারণা কর : আমি মন নই ; আমি দেখছি —আমি চিন্তা করছি, আমি আমার মনের গতিবিধি লক্ষ্য করছি। এইরকম অভ্যাস করতে করতে নিজের সঙ্গে মনের যে অভিন্নভাব, তা দিন দিন কমে আসবে ; শেষ পর্যন্ত নিজেকে মন থেকে সম্পূর্ণরূপে পৃথক ক’রে ফেলতে পারবে, এবং ঠিক ঠিক বুঝতে পারবে, মন তোমার থেকে পৃথক্ । এটা যখন হয়ে যাবে, তখন মন তোমার আজ্ঞাকারী ভৃত্য। তাকে তুমি ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রিত করতে পারবে। যোগী হওয়ার প্রথম স্তর— ইন্দ্রিয়গুলিকে অতিক্রম করা ; আর যখন মনকে জয় করা হয়ে গেছে, তখন সাধক সৰ্ব্বোচ্চ স্তরে পৌছে গেছে। যতদূর সম্ভব একলা থাকবে। আসন নাতি-উচ্চ হওয়া উচিত ; প্রথমে কুশাসন, তারপর যুগচৰ্ম, তারপর রেশম বা পট্টবস্ত্র বিছাবে। হেলান দেবার কিছু না থাকাই ভাল, আর আসন যেন দৃঢ় হয়। সর্বপ্রকার চিন্তা ত্যাগ ক’রে মনকে খালি ক’রে ফেলো ; যখনই কোন চিস্ত মনে উঠবে, তখনই তাকে দূর করে দেবে। এই কাজ সম্পন্ন করতে গেলে জড় বস্তুকে ও আমাদের দেহকে অতিক্রম ক’রে যেতে হবে । বাস্তবিকপক্ষে মানুষের সমগ্র জীবনই ঐ অবস্থা আনবার একটি অবিরাম চেষ্টা। চিন্তাগুলি ছবি, ওগুলি আমরা স্বষ্টি করি না। প্রত্যেক ধ্বনির বা শব্দের নিজস্ব অর্থ আছে ; আমাদের প্রকৃতির সঙ্গে এগুলি জড়িত। আমাদের শ্রেষ্ঠ আদর্শ হচ্ছেন ভগবান। তাকেই ধ্যান কর। আমরা জ্ঞাতাকে জানতে পারি না, কারণ আমাদের স্বরূপই যে তিনি। অশুভ দেখি বলেই অমর্থের স্থা আমরা নিজেরাই করি। আমরা ভিতরে যা, বাইরে তাই দেখি, কেন না জগংটা আমাদের আয়নার মতো। এই ছোট দেহটা আমাদের