পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\eఆR স্বামীজীর বাণী ও রচনা সমুদয় জগৎ তাহার বশীভূত, তাহার দাসম্বরূপ। প্রকৃতিকে এইরূপে বশীভূত করিবার উপায় রাজযোগে উপস্থাপিত হইয়াছে। আমরা বাহ্যজগতে যে-সকল শক্তির সহিত পরিচিত, তদপেক্ষ উচ্চতর শক্তিসমূহকে বশে আনিতে হইবে। এই শরীর মনের একটি বাহ আবরণ মাত্র। শরীর ও মন যে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন বস্তু তাহ নয়, উহারা শুক্তি ও তাহার কঠিন আবরণের মতো । উহার এক বস্তুরই দুইটি বিভিন্ন অবস্থা। শুক্তির আভ্যন্তরীণ পদার্থটি বাহির হইতে নানাপ্রকার উপাদান গ্রহণ করিয়া ঐ বাহ আবরণ প্রস্তুত করে। এইভাবেই মনোনামধেয় এই আভ্যন্তরীণ সূক্ষ্ম-শক্তিসমূহও বাহির হইতে স্কুল পদার্থ লইয়া তাহা হইতে এই শরীররূপ বাহ আবরণ প্রস্তুত করিতেছে। সুতরাং যদি আমরা অন্তর্জগৎ জয় করিতে পারি, তবে বাহাজগৎ জয় করা খুব সহজ হইয়া পড়ে। আবার এই দুই শক্তি যে পরস্পর বিভিন্ন, তাহা নয়। কতকগুলি শক্তি শারীরিক ও কতকগুলি মানসিক, তাহা নয়। যেমন এই দৃশ্যমান জগৎ স্বশ্বজগতের স্থল প্রকাশ মাত্র, তেমনি বাহশক্তিগুলিও সূক্ষ্মশক্তির স্কুল প্রকাশ মাত্র । বিবেকখ্যাভিরবিপ্লব হানোপায়ঃ ॥ ২৬ ॥ —নিরস্তর এই বিবেকের অভ্যাসই অজ্ঞান-নাশের উপায়। সমুদয় সাধনের প্রকৃত লক্ষ্য এই সদসদ্বিবেক—এইটি বিশেষরূপে জানা যে, পুরুষ প্রকৃতি হইতে স্বতন্ত্র, পুরুষ জড়ও নন, মনও নন ; আর উনি প্রকৃতি নন বলিয়া উহার কোনরূপ পরিবর্তনও সম্ভব নয়। কেবল প্রকৃতিই সর্বদ। পরিণত হইতেছে, সর্বদাই উহার সংশ্লেষ, বিশ্লেষ ও পুনঃসংশ্লেষ ঘটিতেছে। যখন নিরন্তর অভ্যাসের দ্বারা আমরা এই বিবেকজান লাভ করিব, তখনই অজ্ঞান চলিয়া যাইবে। তখনই পুরুষ স্ব-স্বরূপে অর্থাৎ সর্বজ্ঞ-সর্বশক্তিমান-ও সর্বব্যাপি-রূপে প্রতিভাত হইবেন । ভস্ত সপ্তম্বা প্রান্তভূমিঃ প্রজ্ঞ ॥ ২৭ ॥ —র্তাহার (জ্ঞানীর ) বিবেকজানের উচ্চতম ভূমির সাতটি স্তর। যখন এই জ্ঞান লাভ হইতে থাকে, তখন যেন উহা একটির পর আর একটি করিয়া সপ্তস্তরে আসিতে থাকে। যখন উহাদের মধ্যে একটি অবস্থা আরম্ভ হয়, আমরা তখন বুঝিতে পারি যে, আমরা জ্ঞানলাভ করিতেছি।