পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় বিভূতি-পাদ এই অধ্যায়ে যোগের বিভূতি (শক্তি বা ঐশ্বৰ্ষ ) আলোচিত হইবে। দেশবন্ধশ্চিত্তস্ত ধারণ ॥ ১ ॥ —চিত্তকে কোন বিশেষ বস্তুতে ধরিয়া রাখার নাম "ধারণা” । যখন মন শরীরের ভিতরে অথবা বাহিরে কোন বস্তুতে সংলগ্ন হয় ও কিছুকাল ঐ ভাবে থাকে, তাহাকে ধারণ ( একাগ্রতা ) বলে। তত্র প্রত্যয়ৈকভানত ধ্যানম্ ॥ ২ ॥ —সেই বস্তুবিষয়ক জ্ঞান নিরস্তর একভাবে প্রবাহিত হইতে থাকিলে তাহাকে ‘ধ্যান” বলে । মনে কর, মন যেন কোন একটি বিষয় চিন্তা করিবার চেষ্টা করিতেছে, , কোন একটি বিশেষ স্থানে যথা, মস্তকের উপরে অথবা হৃদয়ে নিজেকে ধরিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছে। যদি মন শরীরের কেবল ঐ অংশ দিয়াই সর্বপ্রকার অনুভূতি গ্রহণ করিতে সমর্থ হয়, শরীরের অন্য সকল অঙ্গকে যদি বিষয়গ্রহণ হইতে নিবৃত্ত রাখিতে পারে, তবে তাহার নাম "ধারণা ; আর মন যখন কিছুক্ষণ নিজেকে ঐ অবস্থায় রাখিতে সমর্থ হয়, তখন তাহাকে বলা হয় ‘ধ্যান’ । - তদেবার্থমাত্রনির্ভাসং স্বরূপশুষ্ঠামিব সমাধিঃ ॥ ৩ ॥ —তাহাই যখন সমুদয় বাহোপাধি পরিত্যাগ করিয়া কেবল অর্থমাত্রকে প্রকাশ করে, তখন ‘সমাধি’ আখ্যা প্রাপ্ত হয়। যখন ধ্যানে বস্তুর আকৃতি বা বাহভাগ পরিত্যক্ত হয়, তখনই এই সমাধি-অবস্থা আসে। মনে কর, আমি একখানি পুস্তক সম্বন্ধে ধ্যান করিতেছি, ধীরে ধীরে অামি উহার উপর মন একাগ্র করিতে কৃতকার্য হইলাম, তখন কেবল ভিতরের ভাবগুলি অনুভব করিব, অর্থটুকু বুঝিব। কোনরূপ আকারে উহা প্রকাশিত হইবে না। ধ্যানের ঐ অবস্থাকে ‘সমাধি’ বলে ।