পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Վ ՓԵ. স্বামীজীর বাণী ও রচনা ফল শুভ, অশুভ কর্মের ফল অশুভ হইয়া থাকে । কিন্তু যদি শুভাশুভ কর্ম আত্মার উপর প্রভাব বিস্তার করিতে পারে, তবে আত্মা তো কিছুই নয়। প্রকৃতপক্ষে অশুভ কর্ম কেবল পুরুষের স্বরূপ প্রকাশের বাধা দেয় ; শুভ কর্ম সেই বাধাগুলি দূর করিয়া দেয় ; তখনই পুরুষের মহিমা প্রকাশিত হয়, কিন্তু পুরুষ নিজে কখনই পরিবর্তিত বা পরিণামপ্রাপ্ত হন না । তুমি যাহাই কর না কেন, কিছুই তোমার মহিমা—তোমার নিজ স্বরূপ নষ্ট করিতে পারে না ; কারণ কোন বস্তুই আত্মার উপর ক্রিয়া করিতে পারে না, আত্মার উপর কেবল একটি আবরণ পড়ে এবং উহার পূর্ণত আচ্ছাদিত হয় । ষোগিগণ শীঘ্র শীঘ্র কর্মক্ষয় করিবার জন্য 'কায়বৃহ’ অর্থাৎ একসঙ্গে বহু দেহ স্বজন করেন । এই-সকল দেহের জন্য র্তাহারা তাহীদের অস্মিতা বা অহংতত্ত্ব হইতে অনেকগুলি মন স্বষ্টি করেন। তাহদের মূল চিত্তের সহিত পৃথকৃত্ব বুঝাইবার জন্য এই নিমিত চিত্তসমূহকে ‘নির্মাণচিত্ত’ বলা হয়। প্রবৃত্তিভেদে প্রয়োজকং চিত্তমেকমনেকেষাম ॥ ৫ ৷৷ —যদিও এই ভিন্ন ভিন্ন সৃষ্ট মনের কার্য নানাপ্রকার, কিন্তু সেই এক আদি মনই সবগুলির নিয়ন্ত । ভিন্ন ভিন্ন মন ভিন্ন ভিন্ন দেহে কার্য করে, এগুলিকে ‘নির্মাণচিত্ত’ এবং এই শরীর গুলিকে ‘নির্মাণদেহ' বলে ; অর্থাৎ বিশেষভাবে নির্মিত শরীর ও মন । ভূত ( মূল উপাদান ) ও মন যেন দুইটি অফুরন্ত ভাণ্ডারগৃহের মতো। যোগী হইলেই তুমি এ-দুটিকে জয় করিবার রহস্য অবগত হইবে। এই জ্ঞান বরাবরই তোমার ছিল, তুমি শুধু উহা ভুলিয়া গিয়াছ। যোগী হইলে উহা তোমার স্মৃতিপথে উদিত হইবে, তখন তুমি উহাকে লইয়৷ যাহা ইচ্ছা তাহাই করিতে পারিবে, যেভাবে ইচ্ছা সেইভাবে ব্যবহাপ করিতে পরিবে। যে উপাদান হইতে এই বৃহৎ ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তি হয়, এই নির্মাণচিত্ত ও সেই উপাদান হইতে নির্মিত। মন এক পদার্থ আপ ভূত এক পৃথক পদার্থ, তাহা নয় ; উহার একই পদার্থের বিভিন্ন দিক মাত্র। অস্মিতাই সেই উপাদান, সেই সূক্ষ্ম বস্তু, যাহা হইতে যোগীব এই নির্মাণচিত্ত ও নির্মাণদেহ প্রস্তুত হয়। সুতরাং যখনই যোগী প্রকৃতির