পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভগবৎপ্রেম , [ ২৫শে সেপ্টেম্বর, ১৮৯৩, ‘Chicago Herald' পত্রিকায় প্রকাশিত স্বামীজীর একটি বক্তৃতার সংক্ষিপ্ত বিবরণী ] লাফলিন ও মনরো স্ট্রটে তৃতীয় ইউনিটেরিয়ান চার্চের বক্তৃতা-গৃহে সমবেত শ্রোতৃমণ্ডলী গতকল্য প্রাতে স্বামী বিবেকানন্দের বক্তৃতা শ্রবণ করেন। র্তাহার বক্তৃতার বিষয় ছিল ভগবৎপ্রেম ; আলোচনা বাগিতাপূর্ণ ও অপূর্ব হইয়াছিল। তিনি বলেন : ঈশ্বর পৃথিবীর সর্বত্র পূজিত হন, কিন্তু বিভিন্ন নামে এবং বিভিন্ন উপায়ে। মহান ও সুন্দর ঈশ্বরকে উপাসনা করা মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক, এবং ধর্ম মামুষের প্রকৃতিগত। সকলেই ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এবং ঈশ্বরের প্রতি প্রেমই মানুষকে দান, দয়া, ন্যায়পরতা প্রভৃতি সৎকার্ষে প্রণোদিত। করে। সকলেই ঈশ্বরকে ভালবাসে, কারণ তিনি প্রেমস্বরূপ। বক্তা চিকাগোতে আসা অবধি মামুষের ভ্রাতৃত্ব সম্বন্ধে অনেক কিছু শুনিয়াছেন। তিনি বিশ্বাস করেন—আরও দৃঢ়তর বন্ধন মানুষকে যুক্ত করিয়া রাখিয়াছে, কারণ সকলেই ঈশ্বরপ্রেম হইতে সঞ্জাত। মাছুষের ভ্রাতৃত্ব ঈশ্বরের পিতৃত্বেরই যুক্তিগত সিদ্ধান্ত। বক্তা বলেন : তিনি ভারতের বনে বনে ভ্রমণ করিয়াছেন, পর্বতগুহায় রাত্রি কাটাইয়াছেন, সমগ্র প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করিয়া তিনি এই বিশ্বাসে উপনীত হইয়াছেন যে স্বাভাবিক নিয়মের উর্ধের্ব এমন কিছু আছে, যাহা মানুষকে অসত্য বা অন্যায় হইতে রক্ষা করে । তিনি সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, উহা ঈশ্বরপ্রেম। ঈশ্বর যদি ধীশু, মহম্মদ এবং বৈদিক ঋষিগণের সহিত কথা বলিয়া থাকেন, তাহা হইলে ঈশ্বরেরই অন্ততম সস্তান–র্তাহার সহিতও তিনি কেন কথা বলেন না ? স্বামী আরও বলিলেন : সত্যই তিনি আমার সহিত এবং তাহার সকল সন্তানের সহিত কথা বলেন। আমরা তাহাকে আমাদের চতুর্দিকে দেখি এবং তাহার প্রেমের সীমাহীনতা দ্বারা নিরস্তর প্রভাবিত হই এবং সেই প্রেম হইতে আমাদের মঙ্গল ও শুভকর্মের প্রেরণা লাভ করি।