পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

^ Se স্বামীজীর বাণী ও রচনা ব’লে সন্দেহ হবে । এই প্রকার নানা প্রকারে সন্দেহ, সংশয়, প্রমাণ প্রয়োগ ক’রে গ্রন্থতত্ত্ব-নির্ণয়ের এক বিদ্যা বেরিয়ে প’ড়ল । চতুর্থ উপায়—তার উপর আধুনিক বিজ্ঞান দ্রুতপদসঞ্চারে নানা দিক হতে রশ্মি বিকিরণ করতে লাগলো ; ফল—যে পুস্তকে কোন অলৌকিক ঘটনা লিথিত আছে, তা একেবারেই অবিশ্বাস্ত হয়ে প’ড়ল । সকলের উপর—মহাতরঙ্গরূপ সংস্কৃত ভাষার ইউরোপে প্রবেশ এবং ভারতবর্ষে, ইউফ্রেটিস নদীতটে ও মিসরদেশে প্রাচীন শিলালেখের পুনঃপঠন ; আর বহুকাল ভূগর্ভে বা পর্বতপাশ্বে লুক্কায়িত মন্দিরাদির আবিক্রিয়া ও তাহাদের যথার্থ ইতিহাসের জ্ঞান। পূর্বে বলেছি যে, এ মৃতন গবেষণা-বিদ্যা ‘বাইবেল’ বা ‘নিউ টেস্টামেণ্ট’ গ্রন্থগুলিকে আলাদা রেখেছিল। এখন মারধোর, জ্যাস্ত পোড়ানো তো আর নেই, কেবল সমাজের ভয় ; তা উপেক্ষা ক’রে অনেকগুলি পণ্ডিত উক্ত পুস্তকগুলিকেও বেজায় বিশ্লেষ করেছেন । আশা করি, হিন্দু প্রভৃতির ধর্মপুস্তককে ওঁরা যেমন বেপরোয় হয়ে টুকরো টুকরো করেন, কালে সেই প্রকার সৎ-সাহসের সহিত য়াহুদী ও ক্রিস্টান পুস্তকাদিকেও করবেন। একথা বলি কেন, তার একটা উদাহরণ দিই— মাসপেরো ( Maspero ) ব’লে এক মহাপণ্ডিত, মিসর প্রত্নতত্ত্বের অতিপ্রতিষ্ঠ লেখক, ইস্তোয়ার অঁাসিএন ওরিত্মাতাল’ ব’লে মিসর ও বাবিলদিগের এক প্রকাণ্ড ইতিহাস লিখেছেন । কয়েক বৎসর পূর্বে উক্ত গ্রন্থের এক ইংরেজ প্রত্নতত্ত্ববিদের ইংরেজীতে তর্জমা পড়ি। এবার ব্রিটিশ মিউজিয়মের (British Museum) এক অধ্যক্ষকে কয়েকখানি মিসর ও বাবিল-সম্বন্ধীয় গ্রন্থের বিষয় জিজ্ঞাসা করায় মাসপেরোর গ্রন্থের কথা উল্লেখ হয়। তাতে আমার কাছে উক্ত গ্রন্থের তর্জমা আছে শুনে তিনি বললেন যে ওতে হবে না, অমুবাদক কিছু গোড়া ক্রিশচীন ; এজন্য যেখানে যেখানে মাসপেরোর অনুসন্ধান খ্ৰীষ্টধর্মকে আঘাত করে, সে সব গোলমাল ক’রে দেওয়া আছে! মূল ফরাসী ভাষায় গ্রন্থ পড়তে বললেন। পড়ে দেখি তাইতো–এ যে বিষম সমস্ত। ধর্মগোড়ামিটুকু কেমন জিনিস জান তো?—সত্যাসত্য সব তাল পাকিয়ে যায়। সেই অবধি ও-সব গবেষণাগ্রন্থের তর্জমার ওপর অনেকটা শ্রদ্ধা কমে গেছে । > Histoire Ancienne Oriental