পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য 〉。) তীর্থস্থানেই, সেইক্ষণ মাত্র ; এদের দিনরাত, বার মাস। আগে স্ত্রীলোকের আসন, আগে শক্তির বসন, ভূষণ, ভোজন, উচ্চ স্থান, আদর, খাতির। এ যে-সে স্ত্রীলোকের পূজে, চেনা-অচেনার পুজো, ভদ্রকুলের তো কথাই নাই, রূপসী যুবতীর তো কথাই নাই। এ পূজো ইউরোপে আরম্ভ করে মুরেরা—মুসলমান আরবমিশ্র মুরেরা—যখন তারা স্পেন বিজয় ক’রে আট শতাব্দী রাজত্ব করে, সেই সময়। তাদের থেকে ইউরোপে সভ্যতার উন্মেষ, শক্তিপূজার অভু্যদয় । মুর ভুলে গেল, শক্তিহীন শ্ৰীহীন হ’ল । স্বস্থানচ্যুত হয়ে আফ্রিকার কোণে অসভ্যপ্রায় হয়ে বাস করতে লাগলো, আর সে শক্তির সঞ্চার হ’ল ইউরোপে, 'মা' মুসলমানকে ছেড়ে উঠলেন ক্রিস্টানের ঘরে । ইউরোপের নবজন্ম এ ইউরোপ কি ? কালো, আদিকালা, হলদে, লাল, এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকার সমস্ত মানুষ এদের পদানত কেন ? এরা কেনই বা এ কলিযুগের একাধিপতি ? এ ইউরোপ বুঝতে গেলে পাশ্চাত্য ধর্মের আকর ফ্রাস থেকে বুঝতে হবে। পৃথিবীর আধিপত্য ইউরোপে, ইউরোপের মহাকেন্দ্র পারি। পাশ্চাত্য সভ্যতা, রীতিনীতি, আলোক-আঁধার, ভাল-মন্দ, সকলের শেষ পরিপুষ্ট ভাব এইখানে—এই পারি নগরীতে। এ পারি এক মহাসমুদ্র—মণি মুক্ত প্রবাল যথেষ্ট, আবার মকর কুম্ভীরও অনেক । এই ফ্রাস ইউরোপের কর্মক্ষেত্র । সুন্দর দেশ-চীনের কতক অংশ ছাড়া এমন দেশ আর কোথাও নেই। নাতিশীতোষ্ণ, অতি উর্বর, অতিবৃষ্টি নাই, অনাবৃষ্টিও নাই, সে নির্মল আকাশ, মিঠে রৌদ্র, ঘাসের শোভা, ছোট ছোট পাহাড়, চিনার বঁাশ প্রভৃতি গাছ, ছোট ছোট নদী, ছোট ছোট প্রস্রবণ—সে জলে রূপ, স্থলে মোহ, বায়ুতে উন্মত্ততা, আকাশে মানন্দ । প্রকৃতি সুন্দর, মানুষও সৌন্দর্যপ্রিয়। আবালবৃদ্ধবনিতা, ধনী, দরিদ্র তাদের স্বর-দের ক্ষেত-ময়দান ঘষে মেজে, সাজিয়ে গুজিয়ে ছবিখানি ক’রে রাখছে। এক জাপান ছাড়া এ ভূবি আর কোথাও নাই। সেই ইন্দ্ৰভুবন অট্টালিকাপুঞ্জ, নন্দনকানন উষ্ঠান, উপবন—ময় চাষার ক্ষেত, সকলের মধ্যে একটু