পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামীজীর বাণী ও রচনা وجيا পতনবস্থায় সনাতন ধর্মের সমগ্ৰ ভাব-সমষ্টি অধিকারিহীনতায় ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হইয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সম্প্রদায়-আকারে পরিরক্ষিত হইতেছিল এবং অনেক অংশ লুপ্ত হইয়াছিল। এই লবোখানে নব বলে বলীয়ান মানবসস্তান বিখণ্ডিত ও বিক্ষিপ্ত অধ্যাত্মবিদ্যা সমীকৃত করিয়া ধারণা ও অভ্যাস করিতে সমর্থ ইষ্টবে এবং লুপ্ত বিদ্যারও পুনরাবিষ্কার করিতে সমর্থ হইবে ; ইহার প্রথম নিদর্শনস্বরূপ ভগবান পরম কারুণিক, সৰ্বমুগাপেক্ষা সমধিক সম্পূর্ণ, সর্বভাব-সমন্বিত, সর্ববিদ্যা-সহায় যুগাবতাররূপ প্রকাশ করিলেন । অতএব এই মহাযুগের প্রত্যুষে সর্বভাবের সমন্বয় প্রচারিত হইতেছে এবং এই অসীম অনন্ত ভাব, যাহা সনাতন শাস্ত্র ও ধর্মে নিহিত থাকিয়াও এতদিন প্রচ্ছন্ন ছিল, তাহ পুনরাবিষ্কৃত হইয়া উচ্চনিনাদে জনসমাজে ঘোষিত হইতেছে । এই নব যুগধর্ম সমগ্র জগতের, বিশেষত: ভারতবর্ষের কল্যাণের নিদান এবং এই নবযুগধর্ম-প্রবর্তক শ্ৰীভগবান পূর্বগ শ্ৰীযুগধর্মপ্রকর্তকদিগের পুনঃসংস্কৃত প্রকাশ । হে মানব, ইহা বিশ্বাস কর ও ধারণ কর । মৃতব্যক্তি পুনরাগত হয় না । গতরাত্রি পুনর্বার আসে না । বিগতোচ্চাস সে রূপ আর প্রদর্শন করে না । জীব দুইবার এক দেহ ধারণ করে না । হে মানব, মৃতের পূজা হইতে আমরা তোমাদিগকে জীবস্তের পূজাতে আহবান করিতেছি । গতানুশোচনা হইতে বর্তমান প্রযত্নে আহবান করিতেছি । লুপ্ত পন্থার পুনরুদ্ধারে বৃথা শক্তিক্ষয় হইতে সদ্যোনিমিত বিশাল ও সন্নিকট পথে আহবান করিতেছি ; বুদ্ধিমান, বুঝিয়া লও। যে শক্তির উন্মেষমাত্রে দিগদিগন্তব্যাপী প্রতিধ্বনি জাগরিত হইয়াছে, তাহার পূর্ণবস্থা কল্পনায় অনুভব কর ; এবং বৃথা সন্দেহ, দুর্বলতা ও দাসজীতিস্থলভ ঈর্ষাদ্বেষ ত্যাগ করিয়া এই মহাযুগচক্র পরিবর্তনের সহায়তা কর । আমরা প্রভুর দাস, প্রভূর পুত্র, প্রভুর লীলার সহায়ক—এই বিশ্বাস দৃঢ় করিয়া কার্যক্ষেত্রে অবতীর্ণ হও ।