পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান সমস্যা Voy অতি প্রাচীনকালে একবার ভারতীয় দর্শনবিদ্যা গ্রীক উৎসাহ সম্মিলনে রোমক, ইরানী প্রভৃতি মহা-জাতিবর্গের অভু্যদয় স্থত্রিত করে। সিকন্দর সাহের দিগ্বিজয়ের পর এই দুই মহাজলপ্রপাতের সংঘর্ষে প্রায় অর্ধ ভূভাগ ঈশাদি-নামাখ্যাত অধ্যাত্ম-তরঙ্গরাজি উপপ্লাবিত করে। আরবদিগের ভু্যদয়ের সহিত পুনরায় ঐ প্রকার মিশ্রণ আধুনিক ইউরোপীয় সভ্যতার ভিত্তিস্থাপন করে এবং বোধ হয়, আধুনিক সময়ে পুনর্বার ঐ দুই মহাশক্তির সম্মিলন-কাল উপস্থিত । এবার কেন্দ্র ভারতবর্ষ । ভারতের বায়ু শান্তি প্রধান, যবনের প্রাণ শক্তিপ্রধান ; একের গভীর চিন্তা, অপরের অদম্য কার্যকারিতা ; একের মূলমন্ত্র ‘ত্যাগ', অপরের ‘ভোগ ; একের সর্বচেষ্ট। অস্তমুখী, অপরের বহির্মুখী ; একের প্রায় সর্ববিদ্যা অধ্যাত্ম, অপরের অধিভূত ; একজন মুক্তিপ্রিয়, অপর স্বাধীনতাপ্রাণ ; একজন ইহলোককল্যাণলাভে নিরুৎসাহ, অপর এই পৃথিবীকে স্বর্গভূমিতে পরিণত করিতে প্রাণপণ ; একজন নিত্যমুখের আশায় ইহলোকের অনিত্য সুখকে উপেক্ষ করিতেছেন, অপর নিত্যমুখে সন্দিহান হইয়া বা দূরবর্তী জানিয়া যথাসম্ভব ঐহিক স্থখলাভে সমুদ্যত । এ যুগে পূর্বোক্ত জাতিদ্বয়ই অন্তহিত হইয়াছেন, কেবল র্তাহীদের শারীরিক বা মানসিক বংশধরেরা বর্তমান। ইউরোপ আমেরিকা যবনদিগের সমুন্নত মুখোজলকারী সন্তান ; আধুনিক ভারতবাসী আর্যকুলের গৌরব নহেন। কিন্তু ভস্মাচ্ছাদিত বহির ন্যায় এই আধুনিক ভারতবাসীতেও অন্তনিহিত পৈতৃক শক্তি বিদ্যমান। যথাকালে মহাশক্তির কৃপায় তাহার পুনঃস্ফূরণ হইবে। প্রস্ফুরিত হইয়া কি হইবে ? - পুনর্বার কি বৈদিক যজ্ঞধূমে ভারতের আকাশ তরলমেঘাবৃত প্রতিভাত হইবে, বা পশুরক্তে রস্তিদেবের কীর্তির পুনরুদ্দীপন হইবে ? গোমেধ, অশ্বমেধ, দেবরের দ্বারা সুতোংপত্তি আদি প্রাচীন প্রথা পুনরায় কি ফিরিয়া আসিবে বা বৌদ্ধোপপ্লাবনে পুনর্বার সমগ্র ভারত একটি বিস্তীর্ণ মঠে পরিণত হইবে ? মনুর শাসন পুনরায় কি অপ্রতিহত-প্রভাবে প্রতিষ্ঠিত হইবে বা দেশভেদে