পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালা ভাষা { ১৯ • • খ্ৰীষ্টাব্দে ২৫শে ফেব্রু আরি আমেরিকা হইতে উদ্বোধন পত্রিকার সম্পাদককে স্বামীজী যে পত্র লিখেন, তাহা হইতে উদ্ধৃত । ] আমাদের দেশে প্রাচীন কাল থেকে সংস্কৃতয় সমস্ত বিদ্যা থাকার দরুন, বিদ্বান এবং সাধারণের মধ্যে একটা অপার সমুদ্র দাড়িয়ে গেছে। বুদ্ধ থেকে চৈতন্য রামকৃষ্ণ পর্যন্ত—যারা ‘লোকহিতায় এসেছেন, তারা সকলেই সাধারণ লোকের ভাষায় সাধারণকে শিক্ষা দিয়েছেন। পাণ্ডিত্য অবশ্য উৎকৃষ্ট ; কিন্তু কটমট ভাষ—যা অপ্রাকৃতিক, কল্পিত মাত্র, তাতে ছাড়া কি আর পাণ্ডিত্য হয় না ? চলিত ভাষায় কি আর শিল্পনৈপুণ্য হয় না ? স্বাভাবিক ভাষা ছেড়ে একটা অস্বাভাবিক ভাষা তয়ের ক’রে কি হবে ? যে ভাষায় ঘরে কথা ক ও, তাতেই তো সমস্ত পাণ্ডিত্য গবেষণা মনে মনে কর ; তবে লেখবার বেলা ও একটা কি কিভূতকিমাকার উপস্থিত কর ৮ যে ভাষায় নিজের মনে দৰ্শন-বিজ্ঞান চিন্তা কর, দশজনে বিচার কর—সে ভাষা কি দশন-বিজ্ঞান লেখবার ভাষা নয় ? যদি না হয় তো নিজের মনে এবং পাচজনে ও-সকল তত্ত্ববিচার কেমন ক’রে কর ? স্বাভাবিক যে ভাষায় মনের ভাব আমরা প্রকাশ করি, যে ভাষায় ক্রোধ দুঃখ ভালবাসা ইত্যাদি জানাই, তার চেয়ে উপযুক্ত ভাষা হ’তে পারেই না ; সেই ভাব, সেই ভঙ্গি, সেই সমস্ত ব্যবহার ক’রে যেতে হবে । ও ভাষার যেমন জোর, যেমন অল্পের মধ্যে অনেক, যেমন যে-দিকে ফেরাও সে-দিকে ফেরে, তেমন কোন তৈরী ভাষা কোনও কালে, হবে না । ভাষাকে করতে হবে—ষেমন সাফ ইস্পাত, মুচড়ে মুচড়ে যা ইচ্ছে কর—আবার যে-কে-সেই, এক চোটে পাথর কেটে দেয়, দাত পড়ে না । আমাদের ভাষা—সংস্কৃতর গদাই-লস্করি চাল—ঐ একচাল নকল ক’রে অস্বাভাবিক হ’য়ে যাচ্ছে । ভাষা হচ্ছে উন্নতির প্রধান উপায়,–লক্ষণ । যদি বল ও কথা বেশ ; তবে বাঙ্গালা দেশের স্থানে স্থানে রকমারি ভাষা, কোনটি গ্রহণ করব ? প্রাকৃতিক নিয়মে যেটি বলবান হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে, সেইটিই নিতে হবে। অর্থাৎ কলকেতার ভাষা। পূর্ব-পশ্চিম,