পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্ঞানার্জন 8 X পূর্ববর্তী মহাপুরুষেরা সমুদয়ই জানিতেন, কালবশে সেই জ্ঞানের অধিকাংশই লোপ হইয়া গিয়াছে, একথা সত্য হইলেও ইহাই সিদ্ধাস্ত হইবে যে, ঐ লোপের কারণ, পরবর্তীদের নিকট ঐ লুপ্ত জ্ঞান থাকা না থাকা সমান ; নূতন উদ্যাগ করিয়া, পুনর্বার পরিশ্রম করিয়া তাহ আবার শিখিতে হুইবে । আধ্যাত্মিক জ্ঞান যে বিশুদ্ধচিত্তে আপন হইতেই স্ফুরিত হয়, তাহাও চিত্তশুদ্ধিরূপ বহু আয়াস ও পরিশ্রম-সাধ্য। আধিভৌতিক জ্ঞানে যে সকল গুরুতর সত্য মানব-হৃদয়ে পরিস্ফুরিত হইয়াছে, অনুসন্ধানে জানা যায় যে, সেগুলিও সহসা উদ্ভূত দীপ্তির ন্যায় মনীষীদের মনে সমুদিত হইয়াছে, কিন্তু বন্য অসভ্য মঙ্গুষ্যের মনে তাহা হয় না । ইহাই প্রমাণ যে, আলোচনা ও বিদ্যাচর্চারূপ কঠোর তপস্যাই তাহার কারণ । অলৌকিকত্বরূপ যে অদ্ভুত বিকাশ, চিরোপার্জিত লৌকিক চেষ্টাই তাহার কারণ ; লৌকিক ও অলৌকিক—কেবল প্রকাশের তারতম্যে । মহাপুরুষত্ব, ঋষিত্ব, অবতারত্ব বা লৌকিক বিদ্যায় মহাবীরত্ব সর্বজীবের মধ্যে আছে, উপযুক্ত গবেষণা ও কালাদিসহায়ে তাহা প্রকাশিত হয় । ধে সমাজে ঐ প্রকার বীরগণের একবার প্রাদুর্ভাব হইয়া গিয়াছে, সেথায় পুনর্বার মনীষিগণের অভু্যখান অধিক সম্ভব । গুরুসহায় সমাজ অধিকতর বেগে অগ্রসর হয়, তাহাতে সন্দেহ নাই ; কিন্তু গুরুহীন সমাজে কালে গুরুর উদয় ও জ্ঞানের বেগপ্রাপ্তি তেমনই নিশ্চিত ।