পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিব্রাজক ৬৫ করি, কিন্তু তিনি বাপের জন্মে হিমালয়ও দেখেননি, সমুদ্রও দেখেননি, এই আমার ধারণ ॥১ এইখানে ধলায় কালোয় মেশামেশি, প্রয়াগের কিছু ভাব যেন সর্বত্র দুর্লভ হলেও ‘গঙ্গাস্বারে প্রয়াগে চ গঙ্গাসাগরসঙ্গমে । তবে এ জায়গা বলে ঠিক গঙ্গার মুখ নয়। যা হোক আমি নমস্কার করি, সর্বতোইক্ষিশিরোমুখং ব’লে । * - কি স্বন্দর । সামনে যতদূর দৃষ্টি যায়, ঘন নীলজল তরঙ্গায়িত, ফেনিল, বায়ুর সঙ্গে তালে তালে নাচ্চে । পেছনে আমাদের গঙ্গাজল, সেই বিভূতিভূষণা, সেই ‘গঙ্গাফেনসিত জটা পশুপতেঃ’ । সে জল অপেক্ষাকৃত স্থির। সামনে মধ্যবর্তী রেখা। জাহাজ একবার সাদা জলের, একবার কালো জলের উপর উঠছে। ঐ সাদা জল শেষ হ’য়ে গেল। এবার খালি নীলাম্বু, সামনে পেছনে আশে পাশে খালি নীল নীল নীল জল, খালি তরঙ্গভঙ্গ । নীলকেশ, নীলকাস্ত অঙ্গ-আভা, নীল পট্টবাস পরিধান। কোটি কোটি অন্তর দেবভয়ে সমুদ্রের তলায় লুকিয়েছিল ; আজ তাদের সুযোগ, আজি তাদের বরুণ সহায়, পবনদেব সাথী ; মহাগর্জন, বিকট হুঙ্কার, ফেনময় অট্টহাস, দৈত্যকুল আজ মহোদধির উপর রণতাগুবে মত্ত হয়েছে । তার মাঝে আমাদের অর্ণবপোত ; পোতমধ্যে যে জাতি সসাগর-ধরাপতি, সেই জাতির নরনারী—বিচিত্র বেশভূষ, স্নিগ্ধ চন্দ্রের ন্যায় বর্ণ, মূর্তিমান আত্মনির্ভর, আত্মপ্রত্যয়, কৃষ্ণবর্ণের নিকট দৰ্প ও দম্ভের ছবির ন্যায় প্রতীয়মান—সগর্ব পাদচারণ করিতেছে । উপরে বর্ষার মেঘাচ্ছন্ন আকাশের জীমূতমন্দ্র, চারিদিকে শুভ্ৰশির তরঙ্গকুলের লক্ষ-ঝম্প গুরুগর্জন, পেতশ্রেষ্ঠের সমুদ্রবল উপেক্ষাকারী মহাযন্ত্রের হুহুঙ্কার— সে এক বিরাট সম্মিলন—তন্দ্রাচ্ছল্পের ন্যায় বিস্ময়রসে আপ্লুত হইয়া ইহাই শুনিতেছি ; সহসা এ সমস্ত যেন ভেদ করিয়া বহু স্ত্রীপুরুষকণ্ঠের মিশ্রণোংপন্ন ১ কাশ্মীর ভ্রমণ এবং ঐ দেশের পুরাবৃত্ত পাঠ করিয়া পরে স্বামীজীর এই বিষ্ণুর মত পরিবর্তিত হইয়াছিল। মহাকবি কালিদাস অনেক দিন পর্যন্ত কাশ্মীর দেশের শাসনকর্তার পদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন-এ কথা ঐ দেশের ইতিহাসপাঠে অবগত হওয়া যায়। রঘুবংশাদি-বিবৃত হিমালয়বর্ণনা কাশ্মীরখণ্ডের হিমালয়ের দৃপ্তের সহিও অনেক স্থলে মিলে। কিন্তু কালিদাস কখন সমুদ্র দেখিয়াছিলেন কিনা, সে বিপ্লুয়ে কোন প্রমাণ আমরা এ পর্যন্ত পাই নাই । ২ ভ্রমংশঙ্করাচার্যকৃত ‘শিখাপরাধভঞ্জনস্তোত্ৰ । - 4 - وف