পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামীজীর বাণী ও রচনা مجمخ কালের বিচিত্র গতিতে তিনি ৩১ মাইলের উপর দক্ষিণে এসে হাজির ৷ তার প্রায় ছ মাইল নীচে রূপনারায়ণ জল ঢালছেন, মণিকাঞ্চনযোগে তারা তে} হুড়মুড়িয়ে আস্থন, কিন্তু এ কাদা ধোয় কে ? কাজেই রাশীকৃত বালি। সে স্তুপ কখন এখানে, কখন ওখানে, কখন একটু শক্ত, কখন বা নরম হচ্চেন । সে ভয়ের সীমা কি! দিনরাত তার মাপজোখ হচ্ছে, একটু অন্যমনস্ক হলেই—দিনকতক মাপজোখ ভুললেই, জাহাজের সর্বনাশ । সে চড়ায় ছুতে না ছুতেই অমনি উলটে ফেলা, না হয় সোজাসুজিই গ্রাস !! এমনও হয়েছে, মস্ত তিন-মাস্তুল জাহাজ লাগবীর আধ ঘণ্টা বাদেই খালি একটু মাস্তুলমাত্র জেগে রইলেন। এ চড়া দামোদর রূপনারায়ণের মুখই বটেন । দামোদর এখন সাওতালি গায়ে তত রাজি নন, জাহাজ স্টীমার প্রভৃতি চাটনি রকমে নিচ্চেন। ১৮৭৭ খৃঃ অব্দে কলকেত থেকে ‘কাউন্টি অফ স্টারলিং’ নামক এক জাহাজে ১৪৪৪ টন গম বোঝাই নিয়ে যাচ্ছিল। ঐ বিকট চড়ায় যেমন লাগা আর তার আট মিনিটের মধ্যেই খোঁজ খবর নাহি পাই’। ১৮৭৪ খৃঃ ২৪০০ টন বোঝাই একটি স্তীমারের দু মিনিটের মধ্যে ঐ দশা হয়। ধন্য মা তোমার মুখ ! আমরা যে ভালয় ভালয় পেরিয়ে এসেছি, প্রণাম করি। তু-ভায় বললেন, ‘মশায় ! পাট মানা উচিত মাকে ; আমিও বলি, ‘তথাস্তু, একদিন কেন ভায়া, প্রত্যহ । পরদিন তু ভায় আবার জিজ্ঞাসা করলেন, মশায়, তার কি হ’ল ? সেদিন আর জবাব দিলুম না। তার পরদিন আবার জিজ্ঞাসা করতেই খাবার সময় তু ভায়াকে দেখিয়ে দিলুম, পাট মানার দৌড়টা কতদূর চলছে। ভায় কিছু বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘ও তো আপনি খাচ্চেন’। তখন অনেক যত্ন করে বোঝাতে হ'ল ষ্ট্ৰে-কোন গঙ্গাহীন দেশে নাকি কলকেতার এক ছেলে শ্বশুরবাড়ী যায় ; সেথায় খাবার সময় চারিদিকে ঢাকঢোল হাজির ; আর শাশুড়ীর বেজায় জেদ, ‘আগে একটু দুধ খাও’ । জামাই ঠাওরালে বুঝি দেশাচার, দুধের বাটিতে যেই চুমুকটি দেওয়-অমনি চারিদিকে ঢাকঢোল বেজে ওঠা । তখন তার শাশুড়ী আনন্দাশ্রুপরিপ্লুত৷ হয়ে মাথায় হাত দিয়ে আশীৰ্বাদ ক’রে বললে, “বাবা! তুমি আজ পুত্রের কাজ করলে, এই তোমার পেটে গঙ্গাজল আছে, আর দুধের মধ্যে ছিল তোমার শ্বশুরের অস্থি গুড়া করা,—শ্বশুর গঙ্গা পেলেন। অতএব হে ভাই । আমি কলকেতার মানুষ এবং জাহাজে পাটার ছড়াছড়ি, ক্রমাগত মা গঙ্গায়