পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

이 স্বামীজীর বাণী ও রচনা দেখগে, এখনও নিরেট চাকা গড়গড়িয়ে যাচ্ছে! তবে সেটা নিরেট বুদ্ধির পরিচয় বটে, বিশেষ এ রবার-টায়ারের দিনে । অনেক পুরাণকালের মানুষ, অর্থাৎ সত্যযুগের যখন আপামর সাধারণ এমনি সত্যনিষ্ঠ ছিলেন যে, পাছে ভেতরে একখান ও বাহিরে আর একখান হয় ব’লে কাপড় পর্যন্ত পরতেন না। পাছে স্বার্থপরতা আসে ব’লে বিবাহ করতেন না ; এবং ভেদবুদ্ধিরহিত হয়ে কোংকা লোড়া-লুড়ির সহয়ে সর্বদাই ‘পরদ্রব্যেমু লোষ্ট্রবৎ’ বোধ করতেন ; তখন জলে বিচরণ করবার জন্য র্তারা গাছের মাঝখানটা পুড়িয়ে ফেলে অথবা দু-চারখানা গুড়ি একত্রে বেঁধে সালতি ভেলা ইত্যাদির স্বষ্টি করেন। উড়িয়া হ’তে কলম্বো পর্যন্ত কটু মারন (Catamaran) দেখেছ তো ? ভেলা কেমন সমুদ্রেও দূর দূর পর্যন্ত চলে যায় দেখেছ তো ? উনিই হলেন—“উর্ধ্বমূলম্ । আর ঐ যে বাঙ্গাল মাঝির নৌকা—যাতে চড়ে দরিয়ার পাচ পীরকে ডাকতে হয় ; ঐ যে চাটগেয়ে-মাঝি-অধিষ্ঠিত বজরা—যা একটু হাওয়া উঠলেই হালে পানি পায় না এবং যাত্রীদের আপনু আপন দ্যাবৃতার নাম নিতে বলে ; ঐ যে পশ্চিমে ভড়—যার গায়ে নানা চিত্রবিচিত্ৰ-অঁকা পেতলের চোক দেওয়া দাড়ীর দাড়িয়ে দাড়িয়ে দাড় টানে, ঐ যে শ্ৰীমন্ত সদাগরের নৌকা (কবিকঙ্কণের মতে শ্ৰীমন্ত দাড়ের জোরেই বঙ্গোপসাগর পার হয়েছিলেন এবং গলদ চিঙড়ির গোপের মধ্যে পড়ে, কিস্তি বানচাল হয়ে ডুবে যাবার যোগাড় হয়েছিলেন ; তথাপি কড়ি দেখে পুটিমাছ ঠাউরেছিলেন ইত্যাদি ) ওরফে গঙ্গাসাগুরে ডিঙি—উপরে সুন্দর ছাওয়া, নীচে বাশের পাটাতন, ভেতরে সারি সারি গঙ্গাজলের জালা (যাতে 'কুতুয়া গঙ্গাসাগর'—খুড়ি, তোমরা গঙ্গাসাগর যাও আর কনকনে উত্তরে হাওয়ার গুতোয় 'ডাব নারিকেল চিনির পানা' থাও না ) ; ঐ যে পানসি নৌকা, বাবুদের আপিস নিয়ে যায় আর বাড়ী আনে, বালির মাঝি যার নায়ক, বড় মজবুত, ভারি ওস্তাদ– কোন্নগুরে মেঘ দেখেছে কি কিস্তি সামলাচ্চে, এক্ষণে যা জওয়ানপুরিয়া জওয়ানের দখলে চলে যাচ্চে (যাদের বুলি—“আইলা গাইলা বানে বানি’, যাদের ওপর তোমাদের মহন্ত মহারাজের বঘাসুর’ ধ’রে আনতে হুকুম হয়েছিল, যারা ভেবেই আকুল—‘এ স্বামিনাথ ! এ বঘাসুর কঁহা মিলেব ? ই ত হাম জানব না’ ) । ঐ যে গাধাবোট—যিনি সোজাম্বুজি যেতে জানেনই না,