পাতা:স্বামী বিবেকানন্দ (প্রথম খণ্ড).djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবতরণিকা যে মহাপুরুষের পুণ্যচরিত আলোচনায় প্রবৃত্ত হইতেছি তিনি বৰ্ত্তমানযুগের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ পুরুষ । এই নররত্ন বাঙ্গলাদেশে ও বাঙ্গালীজাতির মধ্যে জন্মগ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া আমরা ধন্য । কিন্তু তাহার কাৰ্য্যাকলাপ বাঙ্গালাদেশের সঙ্কীর্ণ পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না ; তিনি লোক-কল্যাণের জন্য দেহ ধারণ করিয়া সমস্ত পৃথিবীতে সনাতন হিন্দু-ধৰ্ম্মের মহিমা প্রচার এবং অলৌকিক সদগুণরাশি প্ৰদৰ্শন করিয়া বিশ্ববাসীকে চমৎকৃত করিয়াছেন । পাশ্চাত্য শিক্ষণ বিস্তারের সূত্ৰপাতের সঙ্গে সঙ্গে যখন জড়বাদ ও নাস্তিকতার বিষম প্লাবনে এ দেশ ভাসিয়া গেল, যখন প্রাচীন ধৰ্ম্মের সত্যাসত্য নিদ্ধারণে অসমর্থ হইয়া শিক্ষিত ব্যক্তিমাত্ৰেই উহার উপর বীতশ্রদ্ধ হইয়া পড়িলেন, যখন খ্ৰীষ্ট্রীয় মিশনারিরা পৌত্তলিক বলিয়া আমাদিগকে উপহাস ও আমাদের দেবদেবী ও পূজাপদ্ধতিকে অবজ্ঞা করিতে লাগিল, তখন ধৰ্ম্মের অধঃপতন ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা অবলোকন করিয়া প্রাচীনের উপর লোকের একটা অভক্তি জন্মিয় গেল এবং একে একে প্ৰাচীনভাব ও সংস্কারগুলি তঁহাদের মন হইতে উৎপাটিত হইতে লাগিল। এই মহাযুগ-পরিবর্তনের সন্ধিস্থলে দণ্ডায়মান হইয়া প্ৰতিভাশালী রাজা রামমোহন রায় প্রাচীন ধৰ্ম্মের সারাংশ অবলম্বনে ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম । প্রচারে ব্ৰতী হইলেন । এই ধৰ্ম্মের উদার মত কিয়ৎপরিমাণে নাস্তিকতার দিক হইতে লোকের মন আকর্ষণ করিতে সমর্থ হইল বটে, কিন্তু লোকে খ্ৰীষ্টান ও ব্রাহ্ম হইয়া সাম্যবাদের দোহাই দিয়া সামাজিক স্বাধীনতার নামে আহার-বিহার ও বিবাহাদি সৰ্ববিষয়ে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচার অবলম্বন