পাতা:স্বামী বিবেকানন্দ (প্রথম খণ্ড).djvu/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইতে জগৎকে রক্ষা করিবার জন্যই আবিভূতি হইয়াছিলেন। বোধ হয় আজ বাঙ্গালাদেশে এমন হিন্দুসংসার নাই যেখানে লোকে প্ৰাতঃ সন্ধ্যা ভক্তি ভরে তঁহার নাম স্মরণ না করে এবং এমন গৃহ নাই যেখানে তঁাহার অন্ততঃ একখানিও প্ৰতিকৃতি না দেখা যায়। দুর্তাহার আবির্ভাবে সমগ্ৰ । জগৎ ধন্য ও পবিত্র হইয়াছে এবং হিন্দুধৰ্ম্মের ইতিহাসে এক নবযুগের সুচনা হইয়াছে। এই মহাপুরুষ শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণ পরমহংস। ইনি যখন প্ৰাণপণ সাধনা জ্বারা সকল ধৰ্ম্মের সত্যতা প্ৰদৰ্শন ও সমন্বয় বিধান করিলেন তখন বাঙ্গালার ইংরাজী শিক্ষিত দলের মুখপাত্ৰগণ একে একে র্তাহাকে দর্শন করিবার জন্য আগ্ৰহান্বিত হইলেন । ভক্ত প্ৰবর , কেশবচন্দ্ৰ সেন, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, প্ৰতাপচন্দ্র মজুমদার, শিবনাথ শাস্ত্রী প্ৰভৃতি ব্ৰাহ্মধৰ্ম্মের স্তম্ভম্বরূপ ব্যক্তিগণ, ডাক্তার মহেন্দ্ৰলাল সরকারের ন্যায় বিজ্ঞানবাদী, হেষ্টি সাহেবের ন্যায় উচ্চশ্রেণীর দার্শনিক এবং ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর, শশধর তর্কচূড়ামণি প্ৰভৃতি সুপ্ৰসিদ্ধ দেশমান্য পণ্ডিতগণ একে একে তঁাহাকে দর্শন ও তাহের সহিত আলাপ করিয়া ধন্য ও বিস্মিত হইতে লাগিলেন । ইনি স্বীয় জীবনে উপলব্ধি করিয়া দেখাইলেন। ষে উপনিষদুক্ত নিরাকার ঈশ্বরও সত্য, আবার কালী, দুৰ্গা, শিব প্রভৃতি সগুণ ঈশ্বরও সত্য। এমন কি পুরাণোক্ত দেবদেবী-লীলা পৰ্য্যন্ত মিথ্যা নহে। এই মহাপুরুষের অসাধারণ আধ্যাত্মিক প্ৰতিভা দর্শনে অনেকে এক্ষণে ইহাকে ঈশ্বরের অবতার বলিয়া পূজা করিয়া থাকেন। কিন্তু সে কথায় প্রয়োজন নাই। আমরা শুধু দেখিব তাহার জন্মগ্রহণে ধৰ্ম্মজগতে কি নুতন ভাব প্রবেশ করিয়াছে। এটী বুঝিতে হইলে শুধু তাহার জীবনটা দেখিলেই হইবে না। তঁহার জীবনের সহিত অচ্ছেদ্যভাবে গ্রথিত আর একটি জীবনও বিশেষ মনোযোগের সহিত অনুধাবন করিতে, হইবে। সেটা হইতেছে পূজ্যপাদ আচাৰ্য্য স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী ।