পাতা:স্বামী বিবেকানন্দ (প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বরাহনগর মঠে তপস্যা ১৬৯ ও সাধনার একটা অঙ্গবিশেষ। অনেক সময় আবার স্বদেশের ইতিহাস ব্যতীত অন্যান্য জাতির ইতিহাসও আলোচিত হইত। তাহার মধ্যে গিবনের “রোম-সাম্রাজ্যের অধঃপতন’ এবং কার্লাইলের “ফরাসী বিপ্লব’এর ইতিহাস প্ৰধান । উপরোক্ত দানাদের ঘর” ব্যতীত মঠে আর একটি ঘর ছিল, সকলে ' তাহার নাম রাখিয়াছিলেন “কালী তপস্বীর ঘর” । এই গৃহের দ্বার অৰ্গলাবদ্ধ করিয়া কালী ( স্বামী অভেদানন্দ ) দিনরাত সংস্কৃত শাস্ত্ৰাদি পাঠ করিতেন। তিনি এরূপ নিবিষ্টচিত্তে অধ্যয়ন করিতেন যে, সময়ে সময়ে দিবারম্ভ হহঁতে নিশীথ রাত্ৰি পৰ্যন্ত মুহুর্তের জন্য র্তাহার অধ্যয়নের বিরাম থাকিত না । অনেকদিন মঠের ভ্রাতারা প্ৰাতঃকালীন ধ্যান-ধারণা সমাপন্যান্তে এখানে আসিয়া সমবেত হইতেন এবং স্বামীজীর সহিত বহু বিষয়ের আলোচনায় রত থাকিতেন, কখন বা বৃক্ষতলে উপবেশন করিয়া ঐশ্নরূপ করিতেন। এক একদিন এক একটা বিষয় অবলম্বন করিয়া প্ৰসঙ্গ উত্থাপিত হইত ও ঐ প্রসঙ্গ উপযুপরি কয়েকদিন ধরিয়া ক্ৰমাগত চলিত। উদাহরণস্বরূপ এখানে দুই একটা বিষয়ের উল্লেখ মাত্র করিব। মনে করুন। একদিন বুদ্ধদেবের প্রসঙ্গ উঠিল। মঠের সকলেই প্ৰথমে “ললিতবিস্তর' নামক পুস্তকখানি তন্নতন্ন করিয়া পাঠ করিলেন, পরিশেষে তাহদের মন পুস্তকোত্ত বিষয়ের চিন্তায় এরূপ মগ্ন হুইয়া গেল, যে তাহারা বৰ্ত্তমান ছাড়িয়া একেবারে অতীতে ডুবিয়া গেলেন। যেন অনুভব করিতে, লাগিলেন যে, ভগবান বুদ্ধদেবের সহিত বুদ্ধগয়া হইতে রাজগৃহে বা সারনাথে চলিয়াছেন, বা বোধিবৃক্ষের তলে তঁহার সত্যলাভ বা নিৰ্ব্বাণদৃশ্য প্রত্যক্ষ করিতেছেন। ভগবান তথ্যগতের ত্যাগ-বৈরাগ্য তখন সম্পূর্ণভাবে তাঁহাদেৱ হৃদয় অধিকার করিয়াছে, তাহারা কখনও তঁহার চিন্তারোহণদৃশ্য