পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী @re ধোপা এসে বললে, “মা ঠাকুরুণ, বাবুর ময়লা কাপড় দাও।” জামার পকেটগুলা সব দেখে দিতে গিয়ে একখানা পোষ্টকার্ড বেরিয়ে এল, হাতে তুলে দেখি, আমার চিঠি, মা লিখেচোন। তারিখ দেখুলুম, পাঁচ দিন আগের, কিন্তু আজও আমি পাইনি। পড়ে দেখি সৰ্ব্বনাশ! মা এলিখেচেন, শুধু রান্না-ঘরটি ছাড়া আর সমস্ত পুড়ে ভস্মসাৎ হয়ে গেছে। এই ঘরটির মধ্যে কোনমতে সবাই মাথা গুজে আছেন! দু'চোখ জ্বালা কবৃতে লাগল, কিন্তু এককেঁাটা জল বেরুল না। কতক্ষণ যে এ ভাবে বসেছিলুম, জানিনে, ধোপার। চীৎকারে আবার সজাগ হয়ে উঠলুম। তাড়াতাড়ি তাকৈ কাপড়গুলো ফেলে দিয়ে, বিছানায় এসে গুয়ে পড়লুম। এইবার চােখের জলে বালিস ভিজে গেল। কিন্তু, এই কি তার ঈশ্বরূপরায়ণতা ! আমার মা গরীব, একবিন্দু সাহায্য করতে অনুরোধ করি, এই ভয়ে চিঠিখানা পৰ্য্যন্ত আমাকে দেওয়া হয়নি। এত বড় ক্ষুদ্রতা আমার নাস্তিক মামার দ্বাবা কি কখনো সম্ভব হতে পায়ুত । আজ তিনি ঘরে আসূতে কথা কুইলুম। বলুলুম, “আমাদের বাড়ী পুড়ে গেছে।” t তিনি মুখপানে চেয়ে বললেন, “কোথায় শুনলে ?” গায়ের ওপর পোষ্টকার্ডাখানা ছুড়ে ফেলে দিয়ে জবাব দিলুম, “বোপাকে কাপড় দিতে তোমারই পকেট থেকে পেলুম। দেখ, আমাকে” নাস্তিক বলে তুমি ঘূণাকর জানি, কিন্তু, যারা লুকিয়ে পরের চিঠি পড়ে, আড়ালে গোয়েন্দাগিরি করে বেড়ায়, তাদের আমরাও ঘূণা করি। তোমার বাড়ীীশুদ্ধ লোকেরই কি এই ব্যবসা ?” যে লোক নিজের অপরাধে মগ্ন হয়ে আছে, তার মুখের এই কথা! কিন্তু, আমি নিঃসংশয়ে বলুতে পারি, এত বড় স্পন্ধিত আঘাত আমার