ه/o জন সাধারণের অজ্ঞতা, অনাবধানতা বা শিথিলতা বশতঃ পীড়া ও মৃত্যুংখ্যার বৃদ্ধি হইতে থাকিলে, রাজা প্ৰজাপুঞ্জের হিতসাধনোদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন করিয়া থাকেন ; সেই সমুদয় বিধি সমষ্টির নাম ষ্টেটু মেডিসীন বা রাজকীয় স্বাস্থ্যবিধি । স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়ম বহুকাল হইতে প্রচলিত। মানবধৰ্ম্মসংহিতায় কেবল ব্ৰাহ্মণ শূদ্রের অধিকার ভেদ মীমাংসিত হয় নাই ; কিন্তু “অতি ভোজন করিবে না”, “জলে মল,মূত্র, নিষ্ঠীবন,রক্ত বা বিষ ক্ষেপন অথবা মলমূত্র লিপ্ত বস্ত্ৰাদি প্ৰক্ষালন করিবে না”, ইত্যাদি বাক্যে ব্যক্তিগত ও সাধারণ স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের মূল সূত্র অতি সংক্ষেপে অথচ বিশদরূপে ব্যাখ্যাত হইয়াছে। এই সমুদয় নিয়ম গাৰ্হস্থ্য ধৰ্ম্মের অঙ্গীভূত। “পরিচ্ছন্নতা স্বর্গের চাবি,” “ঈশ্বরের আদেশ পালনের পরেই জীবনরক্ষার নিয়ম পালন” ইত্যাদি বাক্যে মুসলমান শাস্ত্রকারেরাও স্বাস্থ্যরক্ষার অত্যাবশ্যকতা প্রতিপন্ন করিয়া গিয়াছেন । পুরাতন মুসার বিধিতেও স্বাস্থ্যরক্ষণ সম্বন্ধে অনেক কথা झशिश्न८छ् । আমাদের পূর্বপুরুষগণ শরীরকে সর্বশ্রেষ্ঠ পদার্থ মনে করিতেন। “অগ্ৰেী শরীর পরে ধৰ্ম্ম সাধন”, “স্বাস্থ্যই ধৰ্ম্মাৰ্থ কাম মোক্ষের মূল” ইত্যাদি মহাবাক্যে র্তাহারা শারীরধৰ্ম্মের শ্রেষ্ঠতা প্রচার করিয়া গিয়াছেন । “সুস্থ শরীর অভাবে সমুদয় বিফল, অতএব অন্য সমুদয় পরিত্যাগ করিয়া শরীর রক্ষা কর”, এই তাহাদের অমূল্য উপদেশ । এত পুরাতন উপদেশ লিপিবদ্ধ থাকিতেও আমাদের দেশে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের প্রতি ঔদাসীন্য কেন ? ইহার তিনটী কারণ আছে। প্রথমতঃ, অনেকের ধারণা এই যে, রোগ ও মৃত্যু অদৃষ্টের ফল, কোন চেষ্টা দ্বারা নিবারিত হইবার নহে। এই কথার উত্তরে মহর্ষি আত্ৰেয় বলিয়াছেন যে, বিষম পথ গমন ও অধিক ভার সহন বশতঃ যেমন শকটের চক্ৰ অসময়ে ভগ্ন হইয়া পড়ে, তদ্রুপ অক্ষুধায় ভোজন প্রভৃতি কারণে অকাল মৃত্যু হয়, এবং উপযুক্ত সময়ে সাবধান হইয়া দেহের হিতাচরণ করিলে এই অকালমৃত্যু নিবারিত হয় । লণ্ডন ও কলিকাতার বর্তমান অবস্থা মহর্ষি বাক্য সপ্রমাণ করে। রাণী ষ্টেট, মেডিসীন।
পাতা:স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান - সুন্দরীমোহন দাস.djvu/৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।