সিরীণবাই এখনও (১৯৩৭ খ্রীঃ) বেঁচে আছেন, বোধহয় নব্বইএর উপর বয়স হয়ে গেছে। একদিন বম্বের লাটসাহেব Sir Bartle Frere ওঁদের ওখানে এসেছেন আর প্রথম দেশী সিবিলিয়ানের স্ত্রী বলে ওঁরা আমাকে তাঁর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি ভদ্রতা করে আমার সঙ্গে অনেক কথা বললেন, কিন্তু আমার তখন যা ইংরিজী বিদ্যার দৌড়, তাঁর এক কথাও বুঝতে পারলুম না। পরে তিনি চলে গেলে উনি আমাকে খুব বকলেন যে, লাট সাহেব তোমার সঙ্গে অত কথা বললেন আর তুমি একটিও উত্তর দিলে না? আমি তাঁকে আর কি বলব। তিনি ভেবেছিলেন হেমেন্দ্র বুঝি আমাকে তৈরী করে রেখেছেন। কিন্তু আমি যে কেবল দুতিন অক্ষর বানান করে পড়তে পারি, তা তো জানেন না। বকুনি খেয়ে আমি ঘরে গিয়ে কাঁদতে লাগলুম, তখন সিরীণবাই এসে আমাকে সান্ত্বনা দিলেন।
মানেকজীদের বাড়ীতে আমরা মাসকতক ছিলুম। তার মধ্যে বড় মেয়ে আইমাইএর বিয়ে হল। সিরীণবাই চিরকালই অবিবাহিত ছিলেন। মানেকজী খুব আমুদে লোক ছিলেন। ওঁদের সঙ্গে থেকে ওঁদের আচার ব্যবহার কতক কতক জানতে পারলুম আর তাঁদের সঙ্গে লোকসমাজে একটু একটু বেরতে আরম্ভ করে লজ্জা ভাঙতে লাগল। আমি লজ্জায় কথা কইতুম না বলে মানেকজী আমাকে “মুগী মাসি” (বোবা) বলতেন। টেবিলে বসে কাঁটাচামচ দিয়ে খেতে তাঁদের কাছেই শিখলুম। তাঁরা প্রায়ই লোকজন নিমন্ত্রণ করতেন। ওঁদের ভাষা গুজরাটীরই মত; আমার সঙ্গে হিন্দীতেই কথা হত। আমার সেই অদ্ভূত পোশাক ছেড়ে ক্রমে ওঁদের মত কাপড় পরতে লাগলুম। ওরা ডান কাঁধের উপর দিয়ে শাড়ি পরে। পরে আমি সেটা বদলে আমাদের মত বাঁ কাঁধে পরতুম, সায়া পরতুম। ওরা সর্বদাই রেশমী কাপড় পরে, আর মাথায় একটা রুমাল বাঁধে ও একটা সাদা পাতলা পিরাণ মত জামার তলায় পরে। ওদের ধর্মের সঙ্গে এগুলোর সব যোগ আছে। আর আতস বায়রাম বলে একটা ঘরে ওরা সর্বদাই অগ্নিরক্ষা