প্রসন্নকুমার ঠাকুর অত্যন্ত বেঁটে ছিলেন বলে’ তাঁর গুষ্টিসুদ্ধ তিন চার পুরুষ পর্যন্ত বেঁটে রয়ে গেছে। বালা ও সতু খুব বেঁটে ছিলেন, চেহারাও তেমন ভাল ছিল না, কেবল খুব চুল ও বড় বড় চোখ ছিল। তখনকার ধরণের ইংরিজী পোশাক পরতেন। তাদের ওখানে যে-সব ইংরাজ ভদ্রলোকের নিমন্ত্রণ হত—হয়ত বিয়ের সম্বন্ধ করবার উদ্দেশ্যে—তাঁদের মধ্যে একজন আমাকে চুপি চুপি বলেছিলেন যে, এদের বিয়ে করব কি, শরীরে যে কিছু নেই, শুধু কাঠি। বালা ও সতুর শেষ পর্যন্ত বিয়ে হয়নি। আর সকলে মারা গেলে অনেকদিন পর সতু বিষয়-কর্মের পরামর্শের জন্য মহারাজা যতীন্দ্রমোহনের কাছে কলকাতায় এসেছিল। যদিও জ্ঞানেন্দ্রমোহন বাপের বিষয় থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তবু কিছু বিষয় তাঁর ছিল, তার থেকে তাঁর চলত। শেষে তাঁর এক বন্ধু উকীল Ramsdenকে বলেছিলেন যে সে যদি Tagore নাম নেয় ত তাঁর বিষয়ের উত্তরাধিকারী হতে পারবে।
আমরা প্রথম বিলেতে গিয়ে তাঁর বাড়ীতে উঠেছিলুম আর আমার ছেলেদের দেখে খুশি হয়ে বলেছিলেন যে, বেশ ঠাকুরবাড়ীর উপযুক্ত হয়েছে। তাদের খেলনাও দিয়েছিলেন। পরে তিনি আমাদের অন্যত্র থাকবার ব্যবস্থা করে দেন। Miss Sharp ও Miss Donkins বলে দুই মেমের সঙ্গে আমার ভাব হয়েছিল। Miss Sharpএর বয়স হয়েছিল, কিন্তু কুমারীর মত বেশ সাজগোজ করে থাকতেন। তাঁর একজন দাসী ছিল, সে তাঁর পাকাচুল কুঁক্ড়ে দিয়ে সাজিয়ে রাখত। আমি মনে করতুম তিনি আমার বয়সী, পরে শুনলুম ৪০।৫০ হয়ে গেছে। তাঁর সঙ্গে ব্রাইটন গিয়েছিলুম মনে আছে। সেখানে সমুদ্রের ধারে বেড়াতে যেতুম। তখন একটু একটু কাজ-চালানো ইংরিজী বলতে পারতুৎ। বিলেতে প্রথম বরফ-পড়া দেখে আমি এত মোহিত হয়েছিলুম যে, পাতলা রেশমী শাড়ি পরেই বাইরে ছুটে গেলুম, আর যেমন পড়ছে কুড়তে লাগলুম। সবাই বারণ করেছিল যে এখন বাইরে যেও না। তার দরুণ খুব অসুখ করেছিল। উপর-হাতে ফুলো হয়ে ভিতরে ঘা