পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লীলা যে এক অদ্ভুত আশ্চৰ্য্য জগতের আভাস দিচ্ছে, এই সব পরিচিত, প্রাচীন, সনাতন এবং অতি একঘেয়ে বলে মনে হওয়৷ জগতের পিছনে যে কি বিরাট পরিবর্তনের গতির উদ্দাম নৃত্যের ভাঙাগড়ার খামখেয়ালী লীলা চলেছে, কি অবাধ মুক্ত লীলাচঞ্চল দৃঢ় জীবনস্রোত বেয়ে চলেছে, দুদিনের জীবনে যাকে একঘেয়ে চিরপুরাতন বলে মনে হচ্ছে, সে যে কি বিরাট চঞ্চল, কি গতিশীল, কি প্ৰচণ্ড, কি রোমান্স যে তার পিছনে, সে কথা। ওই নব- আগন্তুক অপরিপক্ক বুদ্ধি শিশু কি বোঝে y সে শুধু ঢেয়ে আছে । ৩ার মুগ্ধ, আনন্দদাপ্ত শিশুনিয়ন দুটি তুলে সমুদ্রের মধ্যের ছোট পাহাড়ের দিকে চেয়ে আছে, যার চূড়ায় কোন এক ধনীর মস্ত একটা সাদা রঙের প্রাসাদ আর নীচে জেলের। চড়ায় ছোট নৌকা নিয়ে মাছ

  • {ኛIር? |

“পুর। যাত্র স্রো তঃ পুলিন মধুন। তন্ত্ৰ সরিতম প্রাচীন যুগের অধুনাতন লুপ্ত যে মহাসমূদ্র প্রাচীন পৃথিবীর পৃষ্ঠে হাজার হাজার লুপ্ত জন্তু বর্কে করে প্রবাহিত হ’ত, সেই প্রাচীন মহাসমুদ্রের তীরে যেন এরা চুপ করে বসে থাকতে। তাদের মাথার উপরকারের নীল আকাশে অহরহ পরিবর্তনশীল মেঘন্তপের মত চঞ্চল এই বিশ্ব তার প্রাচীন আদিমযুগের লতাপাত, জীবজন্তুসহ তাদের চারধারে এমনি করেই মায়াপুর" রচনা করে রইত ! এমনি প্রভাতে সুয্যের আলে। প্রাচীন যুগের সাগরবেলায় পড়তে। আর প্রভাত-সুৰ্য্যেয় আলে। এমনই শীকরসিক্ত প্ৰাচীন ধরনের বিন্যক শাক কড়ি পলার ওপয়ে রামধন্যর রং ফলাতে। সব শুদ্ধ নিয়ে প্রাচীন মহাসমুদ্রের বেলাভূমি আজকাল অন্ধকার পণি-গন্ডে চুনাপাথর বা বেলেপাথরে রূপান্তরিত তয়ে আছে। মহাকালের গহন-গভীর রহস্যের নৃত্য-ক্ষুব্ধ চরণচিহ্নের মত । ৷৷ ২৯শে জলাই, ১৯২৫, কলকাতা ৷ অন্ধকার সন্ধ। । বর্ষার মেঘে মেঘে আকাশ ছাওয়া । জলার ধারে বনে আছে। বর্ষার জলে সতেজ ঘন সবুজ ঝোপঝাপ, গাছপালায় বর্ষণক্ষান্ত ভাদ্র সন্ধ্যায় মেঘান্ধকার ঘনিযে আসছে -এখানে ওখানে জোনাকির দল জলছে, জলের ধারে কচুবনে ব্যাঙ ডাকছে, আকাশে এক ফালি চাঁদ উঠেছে, চারিদিক নীরব, কোনো দিকে কোনো শব্দ নেই। Y