পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বন তার কৈশোরকে স্বপ্নমণ্ডিত করেছিল ? ক’ত শুভ অবসরে তার ব্যাপম্যায়ের কথা ভাবতো-হয়তো তাদের তরুণী নববিবাহিতা বধুরা শতদ্রু, গঙ্গা-অজানা কোন গ্ৰাম্য নদীর তীরে তাদের প্রতীক্ষায় বিরহাকুল হৃদয়ে দিন গুণে গুণে দেওয়ালে অ্যাচড় কেটে রাখতে-হাজার বছরের দুয়ার দিয়ে কতকাল আগেসে সব ছাত্র, সে সব অধ্যাপক, তাদের বাপ-মা কোথায় স্বপ্নের মত কোথায় মিলিয়ে গিয়েছে। অদূরের রাজগৃহের প্রাচীন কোন রাজার কোষাগার আজ অন্ধকার রুদ্ধবায়ু ভূগর্ভের কুক্ষিতে গুপ্ত,—ইট, মাটি কাঠের ভূপের আড়ালে সে সব দিনের কথা বসন্তের ফলের মত ঝরে গিয়েছে। এদেরও সুখ-দুঃখ, আশা নিরাশা, মিলন-বিরহের বঁাশিও আজ হাজার বছর ধরে এই নিৰ্জন প্ৰান্তরের হাওয়ার নিঃসীম শূন্যে কানে কানে তাদের রহস্য কাহিনী গান করে এসেছে । ৷৷ ১১ই নভেম্বর, ১৯২৭, নালন্দা ৷ একটা প্রাচীন সাম্রাজ্যের গৰ্ব্বদৃপ্ত রাজধানীর উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। দুটা রাজগিরি মাটির তলে অন্ধকারে চাপা পড়ে আছে। কেবলই মনে হয়, এত প্রাচীন দিনের রথ, সৈন্য, কোলাহলভরা জয়দৃপ্ত পথ, চৈত্য, স্তৃপ, কত রাজনৈতিক, কবি, সেনানায়ক, মন্ত্রী, তরুণ-তরুণী, বালক-বালিকা, শ্ৰেষ্ঠ, পুরোহিত যেন মাটির তলে কোথায় চাপা রয়েছে । তাদের সমাধির উপর দিয়ে হেঁটে। বেড়াচ্ছি। মহাভারতের যুগের কথা, তার ছবি-কতকাল আগে ভীম বলে যদি --(কোনকালে থেকে থাকেন, তবে তিনি এসেছিলেন-সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল সেই ছেলেবেলার দিনের জানলায় বসে দুপুর রোদে এই জরাসন্ধের কারাগারের কত ছবিই যে দেখেছি। ! আমি বেশ মনে ভাবছি-পুরোনো সে যুগের এক তরুণ সেনানায়ক মগধের দূৱ প্ৰান্ত থেকে যুদ্ধ জয় করে ফিরে এসেছিল তার বাড়ী ফিরে আসা তার বিরহী মনটার তৃষ্ণ-আবার মা, বাপ, ভাই, বোন ও নববধূর সঙ্গে মিশবার যে আকাজক্ষা-হাজার হাজার বছর পরে যেন আমার মনে এসে বাজছে । ছায়ার মত, স্বপ্নের মতো, তারা কোথায় মিলিয়ে গিয়েছে কতকাল আগে । পাহাড়ে পাহাড়ে জংলীবাশের বনে শেষ মধ্যাহ্নের স্নান রোদের মধ্যে, বুনো পাখীর কাকলীর তানে, কতকাল আগেকার মিলিয়ে যাওয়া আশা, দুঃখ, সুখ, হর্ষ, প্রেম ও স্নেহের তান করুণ হয়ে ওঠে। এই দুই পাহাড়ের মধ্যবৰ্ত্তী স্থানে ঘন জঙ্গলে বসে আছি ময়নাৰ্কাটা, কুনো 象总