পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার বিরাট চরণ-পেষণে । মহাশূন্যে র্তার মহাবিষাণ শুধু অনন্তকাল ধরে এই চলে যাওয়ার উদাস ভেরীধ্বনি বাজাচ্ছে... অনাহত শব্দের মত তা সাধারণ মানুষের শক্তির বাইরে । সে ধ্বনি সম্রাজ্ঞী ইউডক্সিয়া শোনেন নি । শুনেছিলেন সাধু জন ক্রাইসোটম। তাই তুচ্ছ বিষয়লিন্স ফেলে দিয দূর সিরিয মরুভূমির নির্জন পাহাড়ের মধ্যে লোকচক্ষুর অন্তরালে তিনি ধ্যান জীবন যাপন করতেন । সান্ধ্য সূয্যচ্ছটিায় সিরিয়ু মরুভূমির বালুরাশিতে সাধু জন এই গতিলালার স্বপ্ন দেখেছিলেন নিশ্চয়ই। ৷ রাত্ৰি বারোটা, ৬ই ডিসেম্বর, ১৯২৭, ইসমালিপুর ৷ সন্ধ্যার পর আমার নিজের ঘোড়াটায় চড়লাম ৷ প্ৰথমে ঘোড়াটায় চড়ে বিরুতেই সেটা বড় বদমায়িসী সুরু করে দিল । রামজোতের বাসায় চালের কাছে নিয়ে গিয়ে প্ৰায় ঠেসে ধরেছিল। আর কি ! ..<গতিক বুঝে অন্য কোনদিকে না গিয়ে বাঙ্গালী ধাপের দিকে গেলাম। সেখানে কারা মাছ ধরছে । অনেক পাখী বসে আছে, কিন্তু কয়দিনই উপরি উপরি পাপী মারতে গিয়ে অকৃতকায, হওয়ার দরুণ শিকারে আর সম্পূহ। নাই ! ব’লা ধাপের ওপারের জঙ্গলের মাথায় সুষ্য অস্ত গেল।--দ্বিরায় সুষ্য অস্ত একটা দেখবার জিনিস-কি রাঙা টকটকে আগুণ রংএর সোনা ? সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে।--জোরে ঘোড ছুটিয়ে দিয়ে দিলবারের টোলা বাসবিরিদের বাস। পার হয়ে চললাম । বাম মণ্ডলের টোলা যেতে যেতে বেশ জোৎস্না উঠলো । (লাধাই টোলায যখন গিয়েছি, তখন তারা আগুণ পোয়াতে বসেছে । তারপরই নিৰ্জন জঙ্গলের মধ্যে ঘোড়া ঢোকালাম। ঘন জঙ্গলে ভাল করে জ্যোৎস্না ঢোকেনি খাটো খাটো বন ঝাউগাছগুলো শিশিরে ভিজে গিয়েছে । জঙ্গল ক্ৰমে ঘনতর হ’ল, পথ শেষ হয়ে এল। আগে আর বছর যেখানে রাইচ-আমার লুট হয়েছিল, সেইদিকে vঘাড়া নিয়ে চল। গেল। অবশ্য একটু একটু ভয় হয়েছিল। বনে শূয়র বাঘের ভয় খুব । কাল অনেক রাত্রে ফেউ ডাকছিল। ভয়কে জয় করার জন্যে জিদ করেই আরও ঘন নিৰ্জন বনে ঘোড়া ঢুকিয়ে দিলাম। পরে অনেকটা গিয়ে ঘোড়া ফিরিয়ে আনলাম। দূরে পূর্বদিকে চেয়ে মনে হ’ল আমাদের বাড়ীর নিৰ্জন ভিটায় বঁাশবনের ফাক দিয়ে একটু একটু জোৎস্না পড়েছে-এই শীতকালে কবে দোলাই গায় দিয়ে শৈশবে পাটালি দিয়ে চালভাজা খাবার লোভে তাড়াতাড়ি বাড়ী ফিরে এসেছি। তারপর লোধাইটোলা ছেড়ে সোজা পথটায় ܟܹ9ܛ