পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘোড়া ছুটলো। চতুর্দশীর মাঠভরা ধপধাপে জ্যোৎস্না, নিজন মেঠো পথহুহু করে ঘোড়া ছেড়ে একেবারে বাংলা মণ্ডলের টোলার কাছটায় এসে পড়লাম । মনে পড়লো ১ন ১৮ সালের এই সময় এই দিনগুলোতে হরিপদ দার সঙ্গে দাবা খেলে সকাল বিকাল কি করেই কাটাতাম । পাশের মাঠটায় অনেক লাল হাস ( চক্ৰবাক ) কাল সন্ধ্যায় বসেছিল। রামচরিতের সঙ্গে মারতে এসেছিলাম, কিন্তু গুলি করতেই সব পালিয়ে গিয়েছিল । জ্যোৎসার মধ্যে দিয়ে শুধুই ঘোরা হ’ল। ইউনিভার্সিটীি ইনসটিচুটে সিল্কের চাদর ওড়ানো মেয়েলি কলকাতায় ছেলের সঙ্গে ও এই ইংরাজ explorer যুবকদের কি তফাৎ ! ঐ রকম হওয়া চাই-দুৰ্দ্ধৰ্ষ, দুঃসাহসিক ঘোড়সওয়ার । বনে জঙ্গলে মেরুপ্রদেশের তুষার ভূমিতে কাটিয়ে এসেছে- কতবার মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছেSi Gaia i NRb Sèl-out of chaos he has created something, ভগবানের তেজ, যৌবনদীপ্তি, জ্ঞান। অথচ কলকাতায় যখন ক্লাবে গিয়ে বসবে তখন সৌখীন খুব । সেও সিস্কের চাদর ওড়াবে, বেয়ারার হাতে কোকো বা কফি খাবে। আজ সতীশের পত্র পেয়েছি বহুদিন পরে । সে দরজার কাজ শিখতে কোন স্কুলে পড়ছে--কিছু সাহায্য চায় । কতকালের কথা।--সেই জাঙ্গিপাড়া-সেই ঠিক এই সময়ে জাঙ্গিপাড়া রেলষ্টেশনের মধ্যে রাখাল বাবুর সঙ্গে বসে গল্প করা, সেই ত্রিপুরা বাবু, বুড়ো চক্কবিত্তি মশায় চাল কড়াই ভেজে আনতেন-সতীশ দুধ জাল দিয়ে নিয়ে আসতো, আর রুটী করে নিয়ে আসতে। সেই একদিনের ছুটী কোথাও না গিয়ে জাঙ্গিপাড়াতেই কাটানো গেল । লাইনের ধারে চেয়ারে বসে তেল মাখলাম-সে এক জীবন কেটেছে । মনের কোথায় যেন অদৃশ্য খোপে গত জীবনের স্মৃতি সব ঠাসা আছে, --পিয়ানোর চাবিতে হাতপড়ার মত দৈবাৎ কোন পুরোনো খোপে হাত পড়ে যায়-হঠাৎ সেটা বড় পরিচিত সুরে বেজে উঠে- অনেক কালের আগের একটা দিন অল্পক্ষণের জন্য বর্ণে গন্ধে রূপে রসে আবার ফিরে আসে । এই রকম এল কাল-হঠাৎ অনেককাল আগে র” পুর থেকে ফিরে আসার পথে রাণাঘাট এসে অমৃতকাকার সঙ্গে যে রাণাঘাট Exhibition দেখতে গিয়েছিলাম থামাকো সেই সেইদিনটার কথাই মনে পড়ে গেল ! সেই “সাজাহান” থিয়েটার হবে অত্যন্ত জাকজমকের সঙ্গে তার বিজ্ঞাপন-সেই চানাচুর ভাজা কিনে খাওয়া-সেই বাবার পাতানো মায়ের বাড়ী যাওয়া-স্পষ্ট ভাবে সব কথা মনে এল । og