পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদারভাবে প্রসারিত মনে ভোগ বা বেঁচে থাকবার আর্ট । এটুকুও শিখতে श् । ৷৷ ১৪ই জান্সয়ারী, ১৯২৮, ইসমানিপুর। বৈকালে ঘোড়া করে বেড়াতে বেরুলাম । লেধাই টোলার ওদিকে জলার ধারের রাইচীক্ষেতের দিকে আকাশটা কি সুন্দর দেখাচ্ছিল--এত রাইচীফুল ফুটে আছে-দূরে সন্ধ্যার ধূসর আকাশের নীচে উন্মুক্ত দূরপ্রসারী হলুদ রংএর রাইচীক্ষেত কি সুন্দরই দেখাচ্ছিল। এই শুকনো কাশীবনের সোদা সোদা ছাযাভৱা গন্ধ, এই উদার নীল আকাশ, এই ঘনশ্যাম শস্য ক্ষেত্র, এই নিৰ্ম্মল বাতাস, চখাচখির সারি, দূরের ধূসর পাহাড়রাজি, এই গতির বেগ-সব শুদ্ধ মিলে জীবনকে পরিপূর্ণতা ও সাফল্যের তৃপ্তিতে ভরিয়ে দেয়। আমি না ভেবে পারিনে যে এই উন্মুক্ত উদার গতিশীল যাত্রাপথের পথিক যারা নয় জীবন সম্পদে তারা দীন । বসিরহাট থেকে পত্র এসেছে বহুদিন পরে পাটালি পাঠানোর জন্যে । বহুদিনের কথা মনে পড়ে । ৬০, মির্জাপুরের কলেজ হোষ্টেলে এই শীতের দিনের যে অপূৰ্ব্ব দিনগুলো—সেই প্রথম যৌবনের দীপ্ত উৎসাহ, মায়া জগতের স্বপ্ন, শিশিরবাবুর অভিনয় “ইনষ্টিটিউটে দেখে এসে পথের মোডে ফুটপাথে তাই নিয়ে যে মেতে থাকা । তারও আগে এই প্রথম বসন্তের দিনে রমাপ্রসরের জন্যে ফাস্তানী দেখতে যাওয়া-সেই “ফাগুন লেগেছে বনে বনে’-সেই ভূতনাথের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তার সঙ্গে Landlor পড়ার দিনগুলো । সেই গ্রামের বসন্ত দেখেছি ১৯১৭ সালে-এই দশ বৎসরের মধ্যে তা আর হয়নি । ৷৷ ১৬ই জানুয়ারী, ১৯২৮ ৷৷ আজ এত জোরে ঘোড়া ছুটিয়ে না। এলে কি ষ্টীমার ধরতে পারতাম ? জঙ্গল থেকে বার হয়েই দেখি ষ্টীমার এপারে । ভাগ্যিস ছিল ছোট ঘোড়াটা।--বালির চর বেয়ে ঝড়ের বেগে ঘোড়া উড়িয়ে তবে এসে ষ্টীমারের ছাড়বার ঘণ্টা দেবার সঙ্গে সঙ্গে পৌছে গেলাম ঘাটে । ” দেবীবাবুর ধৰ্ম্মশালায় উঠেছি আজ। একবার সরাইখানার অভিজ্ঞতাটা হোক না ? দুনিয়াটা তো একটা বৃহৎ ধৰ্ম্মশালা-বড়ির মধ্যে যে জিনিসটা ছোট অথচ বািড়রই প্ৰতীক সেটাকে চিনে নি। وqه