খোথোকার খোঁজে আসিয়া রণেন্দ্রকে দেখিয়া অমিয়া ফিরিয়া যাইবে কি না তাহাই ইতস্ততঃ করিতেছিল। সে তাহাদের আলোচনা শুনিতে পায় নাই। মীনার আহ্বানে ভিতরে আসিলে রণেন্দ্র একটুখানি হাসিল। সে হাসিতে উত্তাপ ছিল না—ব্যঙ্গ বিদ্রূপ ছিল না। তৃপ্তির স্নিগ্ধ মধুর হাসি! অমিয় যে তাহার সঙ্গ চাহিয়াছিল, তাহার অভাব অনুভব করিয়াছিল, ইহারই আনন্দ হয়ত সে হাসির ভিতর প্রচ্ছন্ন হইয়াছিল। সে হাসিটুকু মীনার মনে অন্ততঃ এই অর্থ ই জানাইল। অমিয়ার হাতে একটি গোলাপ ফুল ছিল। ফুলটি খোকার কাছে ধরিয়া সে তাহাকে প্রলোভিত করিতেছিল।
মীনা সহসা পুরাতন প্রসঙ্গ তুলিয়া কহিল—“খোকার অসুখে তখন সব কথা চাপা পড়ে গিয়েছিল। সেদিন রাত্রে অমিয়া তোমাকে কি বিপদেই ফেলেছিল—আমি এখন কেবল সেই কথাই ভাব্চি। জলের উপর বেচারী যখন অজ্ঞান হয়ে পড়্ল, তখন তোমাকে আচ্ছা নাকালই হতে হয়েছিল ত? অবশ্য তোমার সঙ্গে অবস্থা বদল কর্তে পেলে তখন অনেকে হয়ত ভাগ্য মনে কর্তে পারত। কিন্তু আমাদের জাতটা যে দয়ারও যোগ্য নয় এই না তোমার ভাষ্য”?