পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি

যাওয়া, কঞ্চির তীর ধনুক, ঘুড়ী লাটাই লইয়া খেলা করা—তাহার ভাল লাগিত। মেয়েটির বয়োবৃদ্ধির সহিত ত্রিপুরাচরণ তাহাকে লেখাপড়া শিক্ষা দিতেছিলেন। মেধাবিনী বালিকা অতি দ্রুত শিক্ষা করিয়া মাতামহকে বিস্মিত ও পুলকিত করিয়া তুলিতেছিল। কিন্তু এ অনাবিল শান্তি-সুখটুকুও ত্রিপুরাচরণের অদৃষ্টে সহিল না।

 অমিয়ার মা ছাড়া তাঁহার আর এক কন্যা ছিল। ছোট মেয়ে সত্যবতীর অল্প-বয়সে বিবাহ হইয়াছিল— সেই পর্য্যন্ত সে শ্বশুরগৃহেই বাস করিতেছিল। ত্রিপুরাচরণ মেয়েকে আনিবার জন্য অনেকবার চেষ্টা করিয়া শেষে হাল ছাড়িয়া দিয়াছিলেন। লোকমুখে মধ্যে-মধ্যে জামাতার দুশ্চরিত্রতা ও দুর্ব্বৃত্ততার সংবাদ পাইতেন। নিরুপায়ে নীরবে সহ্য করিয়া থাকা ছাড়া তাঁহার আর উপায় কি ছিল? অমিয়ার প্রতি অধিক মনোযোগী হইয়া তাই তিনি মনের ক্ষোভ মিটাইতে চাহিতেন।

 বালিকা-বধূ সত্যবতীর স্বামীর নিকট অমানুষিক নির্য্যাতনভোগ ছাড়া অন্য কোন পাওনাই ছিল না। স্বামীকে সে যমের ন্যায় ভয় করিত। তিনি সজ্ঞানে বাড়ী আসিলে সে যে কোথায় গিয়া লুকাইবে, তাহার স্থান খুঁজিয়া পাইত না। পৌষ মাসের দারুণ শীতে একবস্ত্রা