পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
১০৭

ঢিপ্ করিতেছিল। ঠোঁট শুকাইয়া উঠিতেছিল। চোর যেন চুরি করিতে আসিয়াছে। এই বিচলিত ভাবে সে নিজেই নিজের মনে বিস্ময় বোধ করিল। সংসারকে উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখিয়া দর্পভরে অবলীলায় যে চিরদিন চলিয়াছে, আজ তাহার সারা অঙ্গ জুড়িয়া এ কি দুর্ব্বহ জড়তার আবির্ভাব? সে ত কোন অসদভিপ্রায়ে এখানে আসে নাই! অন্যায় কার্য্যও ত করে নাই কিছু। তবে কেন এ লজ্জা? কিসের জন্যই বা এত সঙ্কোচ?

 ঘরে কেহ ছিল না। বিছানায় ছেঁড়া কাগজের স্তূপ— ঘরের মেঝেয় ফুলের পাপড়ি ছড়ান। জুতার একটি পাটি, সাবানের কেস্, কাঠের বল, চুল আঁচড়ান ব্রাস্ এখানে সেখানে ছড়ান থাকিয়া খোকাবাবুর অনতিপূর্ব্বের অবস্থানের সাক্ষ্য প্রদান করিতেছিল। টেবিলের উপর বহিগুলির অবস্থা এতখানি শোচনীয় না হইলেও, সেখানেও তাহার অল্পস্বল্প বিপ্লব সংবাদ প্রচার করিতেছিল। অমিয়া খালি ফুলদানীতে ফুলের তোড়াটি রাখিয়া দিয়া, প্রথমেই মনে করিল ফিরিয়া যাইবার পূর্ব্বে ঘরখানির একটু সংস্কার করিয়া দিয়া যাইবে। বেচারী নারীদ্বেষীর সৌন্দর্য্যবোধ বড় অল্প—খাটের উপর কোট, টেবিলের একাংশে উড়ানী? এ সব গুছাইয়া রাখা যাহার সাধ্য নাই—সে আবার”—যাক্।