পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
স্রোতের গতি

 ঘুম ভাঙ্গিয়া চোখ মেলিয়া তাকাইয়া সে দেখিল, খোলা খড়খড়ির ফাঁকে ফাঁকে রোদের আলো আসিয়া ঘর ভরাইয়া দিয়াছে। বাহিরে সকাল-বেলার পাখীর গান থামিয়া গিয়া কৃষাণ-বালকের বেসুরা গানের মিঠে আওয়াজের সহিত গরুর গাড়ীর শব্দ হাটের দিন জানাইয়া দিতেছে। অমিয়া হাত দিয়া দেখিল, মাথার বালিসটা তাহার চোখের জলে ভিজিয়া গিয়াছে।

 সে লজ্জিতমুখে তাড়াতাড়ি বিছানা ছাড়িয়া উঠিয়া পড়িল। দিনের আলো ও বাতাস, রাত্রের দুর্ব্বলতাগুলাকে স্বপ্নের মত ভুলাইয়া দেয়। লঘুচিত্তে সে ঘরের বাহির হইল। মনে করিল, রণেন্দ্রকে ভয় করিবার তাহার কোনই প্রয়োজন নাই। তিনি যখন দেশ ছাড়িয়া চলিয়া যাইতেছেন, আর সেও যখন এ দেশের অধিবাসী নহে, তখন যে দু’দিন একসঙ্গে রহিয়াছে, ভদ্রতার আদানপ্রদানে ক্ষতিই বা কি এমন? যাঁহার দয়ায় অপমৃত্যু হইতে রক্ষা পাইল, তাঁহাকে বন্ধু মনে না করিলে অকৃতজ্ঞ হইতে হয় যে! মানুষের পরস্পরের সহিত সন্ধি করিয়া চলাই ভাল— বিদ্রোহ বিবাদের প্রয়োজনই বা কি? দুর্ভাগ্য দেশে সাম্প্রদায়িক দলাদলির ত অভাব নাই। ইহার উপর আর নূতন দল সৃষ্টি করায় লাভই বা কি এমন? তাহাদের