মীনার আদরের বেষ্টন হইতে নিজেকে ছাড়াইয়া লইয়া মৃদু জড়িত স্বরে অমিয়া কহিল—“কিন্তু তুমিও ত জান মীনা, আমার জীবনের যা ব্রত? এ আমি ব্রত হিসাবেই গ্রহণ করেচি। আমার সংকল্পে বাধা দিও না। আমায় মাপ কর।”
“জানি বৈকি, জানি বলেই ত বল্চি। ব্রত কি চিরদিনই কর্বে নাকি? এবার উদ্যাপনের পালা। স্বয়ং ভগবান যখন বরদাতা হয়ে মিলন চাইছেন, তখন ফেরাতে ত তুমি পার্বে না ভাই? না—কোন কথা নয়। প্রকৃতিও যে পুরুষের দাসী। আধখানা দিয়ে সত্যিকার কোন কাজ কি হ’তে পারে কখনও? যে রত্ন তোমায় দেব, জেনো তা অমূল্য। দাসী হ’তে না চাও—দেবীই হোয়ো, কিন্তু হেলায় হারিও না। এটি আমার অনুরোধ নয়—মিনতি। আমি বল্চি তোমার জীবন সার্থক হবে, সুখের হবে। বাইরের উচ্ছ্বাস নেই দেখে তুমি তাঁকে ভুল বুঝ না। এ আমার নয়, আবেদন যাঁর, উত্তর তাঁকেই দিও—বুঝে দিও। বল, মাসীমা রাজি হ’লে তুমি অসম্মত নও”—বলিয়া সে সাদরে অমিয়াকে জড়াইয়া ধরিল।
মীনার আলিঙ্গন-পাশ হইতে নিজেকে ছাড়াইয়া লইয়া সে কেবল নত হইয়া তাহার পা ছুঁইয়া প্রণাম করিল।