বলিয়া অমিয়া তাহার প্রশ্নের প্রতিকূল উত্তর শুনিবার জন্য বিরক্তমুখে উত্তরদাতার দিকে চাহিয়া রহিল।
ষ্টেশন মাষ্টার তাহার মনোভাব বুঝিয়া, শ্লেষপূর্ণ একটুখানি কৃপার হাসি হাসিয়া কহিলেন—“জানি বৈকি! তা সেখানেই যদি যাবেন, ত একটু আগে থাক্তে খবর দিলেই হ’ত। তাঁর নিজের দু-দু’খানা গরুর গাড়ী রয়েছে। একখানা এক পয়সার পোষ্টকার্ড লেখার ওয়াস্তা, ঠিক্ থাক্ত সব। এই কাল এখানকার ডাক্ বিলি হ’য়ে গেল। এখন ত দুদিন আর চিঠিপত্র বিলিও হবে না—রওনাও হবে না।”
এই নূতন খবর শুনিয়া অমিয়ার মুখখানি একেবারে পাঙ্গাস হইয়া গেল। সে তাহার শুভানুধ্যায়িনী উপদেশদাত্রী মিস্ চৌধুরীর উপর মনে মনে বড়ই রাগ করিতেছিল। ষ্টেশন-মাষ্টার তাহাকে সচেতন করিয়া দিলেন, কহিলেন—“ঐ যে ডানদিকের পথটা সোজা চলে গিয়ে বাঁদিকে ঘুরেচে ঐটে ধরে চলে যান্—আপনিই পথ দেখ্তে পাবেন। এই রাস্তাটা পেরুলেই বাড়ীটা নজরে প’ড়্বে। হল্দে রঙের বাড়ী—সামনে গেটের উপর লতাগাছ দেওয়া। মালপত্র এখানেই সব প’ড়ে থাক্ না, কাল প্রাণতোষবাবু, গরুর গাড়ী পাঠাবেন অখন।”