পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
স্রোতের গতি

ঘৃণা ও বিরক্তিতে নাসিকা কুঞ্চিত করিয়া অমিয়া কহিল—“থাক্, তাঁকে আর অত কষ্ট কর্‌তে হবে না। ফের্‌বার গাড়ী কখন?”

 “ভোর ছ’টায়। ঐ একমাত্র গাড়ী, আর ফের্‌বার গাড়ীটাড়ি নেই”—বলিয়া ষ্টেশন-মাষ্টার অপ্রসন্নমুখে নিজের কাজে মন দিলেন। অমিয়া অগত্যা তাঁহার নির্দ্দেশানুযায়ী পথেই অগ্রসর হইতে বাধ্য হইল। মালপত্র ষ্টেশনেই পড়িয়া রহিল। পথের বাঁক ফিরিতেই একটা ঝরণা দেখা গেল। ঝক্‌ঝকে রূপার পাতের মত, সরু জলধারাটি ধীরভাবে বহিয়া চলিয়াছে। দু’ধারে উচ্চ সবুজ ঘাসে ঢাকা তীরভূমি, যেন সবুজ ছাঁটা-পশমের আসনের মত সুন্দর দেখাইতে ছিল। স্বচ্ছ জল সান্ধ্য সূর্য্যালোকে কোথাও বা ঝক্ ঝক্ করিতেছিল—কোথাও বা ঘূর্ণ্যমান বীচিবিক্ষোভিত! পারাপারের জন্য ছোট একটি বাঁশের দোলা সেতু। তাহারই গায়ে, ছোট একটি লম্বা টিনের বাক্সের উপর লেখা “নেক্‌ষ্ট্ ক্লিয়ারেন্স্।” কলিকাতার ঘণ্টায় ঘণ্টায় ডাক বিলির কথা মনে করিয়া, ক্রোধ দুঃখ ও অভিমানে তাহার চিত্ত পূর্ণ হইয়া উঠিল, এখানকার লোকগুলার উপর অশ্রদ্ধায় তাহার এক মুহূর্ত্তও এখানে থাকিতে ইচ্ছা হইতেছিল না। হতভাগা ডাক্তার—কলিকাতায়