পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৩৭

 রমণী সহাস্যে কহিলেন—“ওঃ—মাসীমা বুঝি পাঠিয়েচেন আপনাকে? না, না, গলদ্ আবার কিসের? এখানে ডাক্ ত রোজ বিলি হয় না,—চিঠি আস্‌বে’খন পরে। আসুন না, ভিতরে আসুন, বাইরে রইলেন কেন? ষ্টেশন থেকে পথটুকুও ত বড় কম নয়? কষ্ট হ’ল আপনার খুবই”—বলিয়া রমণী অবলীলায় গরু দুটির গায়ে হাত দিয়া একটুখানি ঠেলিয়া দিতেই তাহারা পথ ছাড়িয়া সরিয়া দাঁড়াইল।

 অমিয়া রমণীর পশ্চাতে চলিয়া, লাল রংকরা সানের মেঝেওয়ালা বড় একখানি ঘরের ভিতর আসিয়া দাঁড়াইল। ঘরের ভিতর আস্‌বাব পত্র অল্প-স্বল্প, কিন্তু সবগুলিই সুরুচির পরিচায়ক। বড় বড় খড়খড়িওয়ালা জানালা দু’টি খোলা রহিয়াছে। তাহার বাহিরের দৃশ্য অমিয়ার এতক্ষণের দুঃখ যেন অনেকখানি ভুলাইয়া দিল। বাহিরে সুন্দর একটি ফুলের বাগান,—সবুজ গাছগুলি নানাবর্ণের অজস্র ফুলে-ফুলে ভরা, দুই চক্ষু জুড়াইয়া দিতেছিল। জানালার ধারে নরম গদির উপর সাদা কাপড়ের ঘেরাটোপ-মোড়া বড় একখানি তক্তাপোষ। গৃহকর্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষামাত্র না করিয়াই অমিয়া তাহার উপর শুইয়া পড়িল। মনে মনে বলিল—কাল ভোর ছ’টার ট্রেণে যতক্ষণ না সে এই