পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
স্রোতের গতি

পাণ্ডব-বর্জ্জিত গ্রাম হইতে বাহির হইতে পারে, ততক্ষণের জন্য এই আরাম-শয্যা তাহারই; এখান হইতে কিছুতেই সে আর নড়িবে না।

 রমণী কহিলেন—“আপনি বড় ক্লান্ত হয়েচেন দেখ্‌চি। খোকাকে একটু ধরুন দেখি, আমি এখনি এলুম ব’লে। আমার ঝিয়ের মেয়ের আজ বিয়ে, সে চারদিনের ছুটি নিয়েছে। ছেলেটা যা দুরন্ত হয়েচে, ওকে নিয়ে কিছু যে কর্‌ব তার যোটি নেই। আপনি একটু রাখুন, আমি টপ্ ক’রে কিছু খাবার নিয়ে আসি।”

 উত্তরের অপেক্ষা না রাখিয়াই নির্ব্বাক্ অতিথির কোলের কাছে ছেলেটিকে বসাইয়া দিয়া তাহার মা তাড়াতাড়ি ঘরের বাহির হইয়া গেলেন। অমিয়ার জীবনে সে আর কখনও কোন ছোট ছেলেকে কোলে করিয়াছে বলিয়া তাহার স্মরণই হয় না। একটুখানি গাল টিপিয়া, বা এতটুকু স্পর্শ করিয়া দু’টা যা-তা কথা বলিয়া নিতান্ত নিরুপায়স্থলে কাজ সারিয়া থাকিতেও পারে। কিন্তু তাই বলিয়া এই বাতাসা-রস-সিঞ্চিত, ময়লা জামা-পরা রোরুদ্যমান ছেলেটিকে লইয়া সে তখন কেমন করিয়া কি করিবে? মা চলিয়া যাইতেই ছেলেটি কান্না শুরু করিয়া দিল। ছেলেটির নরম নরম মোটা মোটা গড়ন, রাঙা রাঙা ফুলো ফুলো গাল