পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৪১

খোকা!” কথাগুলি গানের সুরে উচ্চারিত হওয়ায়— বিরক্তি ক্রোধ ও ঘৃণায় তাহার কণ্ঠস্বর বিকৃত হইয়া উঠিলেও খােকার তাহাতে কোন আপত্তি দেখা গেল না। সে তাহার কান্নামাখা চোখ দু’টিতে অমিয়ার বিরক্ত মুখের পানে আড়ে আড়ে চাহিয়া, পায়ের দোলা দিয়া ঐ গানের সুরই যেন বার বার শুনিতে চাহিতেছিল। “তােমরা তাহ’লে মা’দের কাছে কেবল এই চাও—ঘুমপাড়ানি ঘুমপাড়ানি পিসি মাসি, ঘুম-ঘুম—পাজী ছেলে, দুষ্ট ছেলে, বদ মাস ছুঁচো, আমায় দিয়ে তােমার এই করানো? এখন থেকেই রাজাগিরি, এখন থেকে জোর খাটান!”

 এতক্ষণে খোকার মুখে হাসি ফুটিল। তাহারই জয় হইয়াছে। সে ধীরে ধীরে অমিয়ার বাদামী শিল্কের ব্লাউজের কলারে, তাহার সৌখীন মান্দ্রাজী শাড়ীতে ময়লা চটচটে বাতাসামাখা আঙ্গুলের ছাপ লাগাইয়া, একরাশ লালা ফেলিয়া, তাহার মাথার চুল ধরিয়া কাণ ধরিয়া টানাটানি করিয়া, সে যে গান শুনিয়া তুষ্ট হইয়াছে, তাহারই পুরস্কারস্বরূপ অনিচ্ছুক অমিয়ার নাসিকা ভক্ষণে এইবার উদ্যোগী হইল।

 একখানি ফুলকাটা কাঁসার রেকাবীতে কতকগুলি ক্ষীরের লাড়ু, দু’খানি বাতাসা, খানিকটা দুধের সর, ও