পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৬১

বসিবার ঘরের যে বড় জানালা দু’টি বাগানের দিকে মুখ রাখিয়া তাহাদের বক্ষ-কবাট্‌ মুক্ত রাখিতে বাধ্য হয়, আর সেই দ্বারপথে সময় সময় যে নারীদ্বেষী যুবকের বিরক্ত দৃষ্টি অনিচ্ছাতেও এদিকে পতিত হয়, তাহার লক্ষ্য হইতে কোন নারীরই বোধ করি কখন প্রবৃত্তি থাকে না? প্রথম যেদিন অমিয়ার আবির্ভাবে খোলা জানালাটি তাহাকে সচকিত করিয়া সশব্দে বন্ধ হইয়া গেল, সেদিন অপ্রিয় দৃষ্টির বিষয়ীভূত না হওয়ার আনন্দলাভের পরিবর্ত্তে কেনই যে অপমানের তীব্র ব্যথায় অমিয়ার সারা চিত্ত ব্যথিত হইয়া উঠিল, তাহা সেও বলিতে পারিত না।

 পর্দ্দা না রাখিয়া একবাড়ীতে বাস করিতে হইলে বাড়ীর সব কয়টি লোকের সঙ্গে চোখোচাখি হইয়াই থাকে। খোকার উপলক্ষে রণেন্দ্রের সহিত দু’চারটি কথাও সে কহিয়াছে। এই লোকটির সম্বন্ধে সে যে কল্পনা করিয়া রাখিয়াছিল, বাস্তবের সহিত তাহার কোন মিল দেখা না যাওয়ায় নিজের ভুল-ধারণার জন্য সে যেন মনে মনে একটুখানি লজ্জিতই হইয়াছিল। লোকটিকে দেখিয়া চক্ষুপীড়াউৎপাদক বলিয়া তাহার মনে হয় নাই। তাহার হাবভাব চালচলন কথা কহিবার পদ্ধতি―সবই সংযত সুভদ্র বলিয়াই সে মানিয়া লইয়াছিল। তবু মীনার সহিত কথা কহিবার