পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
স্রোতের গতি

 বাড়ী যাইবার জন্য মনের কাছেও সে ত্বরা অনুভব করিতেছিল। খোকাও তাহার নিকট হইতে ক্রমে দূরে চলিয়া যাইতেছে, তবে আর এখানে তাহার কিসের প্রয়োজন? আজকাল করিয়া মীনা কিন্তু নিত্যই তাহার যাত্রার দিন পিছাইয়া দিতেছিল। এমন সময় সত্যবতীর একখানা পত্র আসায় কিছুদিনের মতই অমিয়াকে বাধ্য হইয়া বাড়ী ফিরিবার সংকল্প ত্যাগ করিতে হইল। সত্যবতী লিখিয়াছেন, তাঁহার এক বাল্যসখীর সঙ্গ-সুযোগে তিনি একবার কাশী যাইতেছেন, ইচ্ছা আছে আরও কোথাও কোথাও ঘুরিয়া আসেন। ফিরিতে মাসখানেক বিলম্ব হওয়াই সম্ভব। অমিয়া যেন এখন বাড়ী না ফিরে ইহাই তাঁহার আদেশ, কারণ তাহাকে একা ফেলিয়া তিনি ত কোথাও যাইতে পারিবেন না।

 চিঠি পড়িয়া মনঃক্ষুণ্ণ হওয়ায় অমিয়ার প্রথমটায় মাসীমার উপর অভিমান হইল, পরে ভাবিয়া দেখিল এ রাগ করা তাহার অন্যায়। পিতৃপরিত্যক্তা এই জঞ্জালকে কণ্ঠহার করিয়াই যে মাসীমা তাঁহার ইহ পরকাল সবই ত্যাগ করিয়াছেন। শুধু তাহার সুখ দুঃখ অভাব অভিযোগ মিটানই তাঁহার জীবনের জপমালা হইয়া উঠিয়াছে। আজ যদি কোনরূপে বাহিরে যাইবার সুযোগ তাঁহার মিলিয়াছে,