মীনা বইখানির পাঠ্য-অংশটি চিহ্নিত করিবার জন্য সেই পৃষ্ঠাটির একটি কোণ মুড়িয়া রাখিয়া বইখানি পাশে রাখিয়া দিয়া হাসির সঙ্গে গাম্ভীর্য মাখাইয়া কহিল―“মিথ্যে অপবাদ দেবেন না বল্চি। জানেন, দুই ভাইয়ে পরীক্ষা নিয়ে তবে নিয়ে এয়েছেন।”
“তা সত্যি―চারুপাঠ দ্বিতীয়ভাগ, পদ্যপাঠ, ভূগোলসার, সন্দর্ভহার, নীতিকথা, শিক্ষাসোপান, পদ্যসার, রয়েলরীডার, নবধারাপাত, কবিতাবলী―বাপ্, নিশ্বাস বন্ধ হ’য়ে আসে! কোথাও ত কমা, সেমিকোলন, ড্যাস্, ফুলষ্টপের বালাই নেই। নামাবলীটা মুখস্ত করেছিলেন কিন্তু খাসা! একটা লাইব্রেরী উজোড় বই!”―বলিয়া রণেন্দ্র হাসিতে লাগিল।
মীনা মুখ ভার করিয়া কহিল―“শুধু নামই মুখস্থ করেছিলাম বৈকি। বইগুলো মুখস্থ কর্ত কে মশাই?― সে আপনাদের কলেজ নয় যে প্রক্সী দেবেন বা নোট পড়ে কায সার্বেন!―সে লোকনাথ পণ্ডিত মশায়ের কাছে পড়া, সেখানে ফাঁকি দিয়ে বিদ্যে হয় না গো!” বলিয়া গাম্ভীর্য্য ছাড়িয়া হাসিতে লাগিল।
রণেন্দ্র ততক্ষণ মীনার পরিত্যক্ত পুস্তকখানি তুলিয়া লইয়া পাতা উল্টাইয়া এখানে সেখানে চোখ বুলাইয়া দেখিতেছিল। বইখানির নাম―“নারীর বিদ্রোহ,” লেখিকা―