পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৭৭

সে মনে মনে অত্যন্ত অস্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করিতে থাকে। তাই লোকচক্ষুর বাহিরে থাকিবার ইচ্ছায় সে আজ তীরে তীরে চলিয়া, অন্যমনে একেবারে বাড়ী হইতে অনেকখানি দূরে আসিয়া পড়িয়াছিল। এখানটা নদীর একটা বাঁক। নদীও এখানে অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত হইয়া আসিয়াছে। পরপারে সূর্য্যাস্তের শোভা দেখা যাইতেছিল। নদীজলে তাহারই অপরূপ আলোকস্রোত বহিতেছিল। অমিয়া নদীতীরে বসিয়া মুগ্ধ হইয়া তাহাই দেখিতেছিল।

 দেখিতে দেখিতে সূর্য্য ডুবিয়া অপরাহ্ণ বেলার অন্ধকারছায়া ঘনাইয়া আসিল। নদীজলে ও গাছের মাথায় ‘হা হা’ হাসির লহর তুলিয়া আচমকা একটা ঝড়ের বাতাস ধূলা উড়াইয়া বহিয়া গেল। অমিয়া চাহিয়া দেখিল, আকাশে স্তরে স্তরে মেঘ জমা হইতেছে―এখনি একটা ঝড় বৃষ্টি আসিল বলিয়া। সে ব্যস্ততা অনুভব করিয়া তাড়াতাড়ি উঠিয়া দাঁড়াইতেই, অনবধানে তাহার শালের রুমালখানি ক্রোড়চ্যুত হইয়া জলের দিকে গড়াইয়া পড়িয়া গেল। একেবারে নীচে পড়িল না, মধ্যপথে একটা বন্য গাছের শাখায় বাধিয়া ঝুলিয়া রহিল। আর একটা দমকা-বাতাস আসিলেই হয়ত এখনি নদীজলে পড়িয়া যাইবে। শালখানি দামী ও সৌখীন। ফিরিবার সময় কোন কোন দিন শীত