পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৮১

হতাশভাবে ইজিচেয়ারে শুইয়া পড়িবেন। আর রণেন্দ্র?— তিনি হয় ত দিব্য নিশ্চিন্ত-মুখে ফিলজফির পাতা উল্টাইয়া যাইবেন—তাঁহার নিরুদ্বেগ-মুখে এতটুকু চাঞ্চল্যের ছায়াও ফুটিবে না।

 রণেন্দ্রের এই কল্পিত নির্ম্মমতা স্মরণে অমিয়া মনে মনে যেন পীড়িত হইল। কল্পনার স্বপ্ন শীঘ্রই ভাঙ্গিয়া গেল। মনে হইল, সে যেন পায়ের তলায় শীতল জলের স্পর্শ অনুভব করিতেছে। নদীতে জল বাড়িতেছে নাকি? হয়ত তাই! সে শেষ-চেষ্টায় আর একবার মাটীর দেওয়ালে ফাটলের মধ্যে যে সকল আগাছা জন্মিয়াছিল, তাহাই ধরিয়া উপরে উঠিবার চেষ্টা করিল। অসম্ভব! মাটী ধরিতে গেলে ধস্ ভাঙ্গিয়া পড়ে। আল্‌গা মাটীর উপরকার ছোট ছোট শিকড়শুদ্ধ গাছগুলা উপাড়িয়া আসে, অন্ধকারে চোখে মুখে শুষ্ক মাটীর চাপ ঝরিয়া পড়ে, লাভের মধ্যে যন্ত্রণার সীমা থাকে না। মানুষের যতক্ষণ আশা থাকে, ততক্ষণ সে তৃণগাছিও অবলম্বনের চেষ্টা করে। কিন্তু আশা ফুরাইলে আর তাহার ভয় ভাবনা কিছুই থাকে না।

 অন্ধকারে পথহীন অচিন্ত্যনীয় বিপদের মুখে সে যখন পায়ের তলার শীতলস্পর্শ হাঁটুর কাছাকাছি আসিয়াছে অনুভব করিল, তখন এমন একটা শারীরিক ও মানসিক