পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
স্রোতের গতি

অবসাদ অনুভব করিল যে, ভয়ের হেতুটা নিকটাগত বুঝিতে পারিয়াও সে আর যেন ভীত হইল না। মনে হইল, এই চন্দ্রনক্ষত্রহীন নদী-বক্ষেই তাহার নিয়তি হয় ত তাহাকে আকর্ষণ করিয়া আনিয়াছে। তটাহত জলের কলধ্বনিতে সে যেন মরণেরই সুর শুনিতে পাইতেছিল। নদী তাহাকে আদর করিয়া ডাকিতেছিল, “আয় আয়।” জলস্থল শূন্য ব্যোম যেন স্তব্ধ হইয়া তাহারই পানে চাহিয়া ছিল। তাহাকে বিদায় দিবার জন্য কেহ কোথাও অপেক্ষা করিয়া নাই। অমিয়ার মনে পড়িল—মাসীমার কথা। মাসীমা যখন ফিরিয়া আসিয়া সব শুনিবেন, কি দারুণ দুঃখের ব্যথায় তাঁহার জীর্ণ অন্তর বিদীর্ণ হইয়া যাইবে। কলিকাতায় ইন্‌ফ্লুয়েঞ্জায় মরিলেই ত চুকিয়া যাইত? এমন সুস্থ-দেহে অকারণে জলে ডুবিয়া মরার চেয়ে সে যে সহস্রগুণে প্রার্থনীয় ছিল।

 মরণ নিকটাগত বুঝিয়া এইবার সে মনে মনে ভগবানের নাম স্মরণ করিতে লাগিল। আকাশে একটুখানি চাঁদ উঠিয়াছিল। ক্ষীণ ম্লান আলোকে অমিয়ার মনে হইল, দূরে নদীবক্ষে কি যেন একটা ভাসিয়া আসিতেছে। জেলেদের মাছ ধরিবার নৌকাও হইতে পারে। কিন্তু সে কেমন করিয়া নিজের অস্তিত্ব উহাদের কাছে জানাইবে? চীৎকার