পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৮৩

করিলে শুনা যাইবে কি? কি বলিয়া চেঁচাইবে? মনে করিল, চীৎকার করিয়া নৌকারোহীর মনোযোগ আকৃষ্ট করিবে, কিন্তু কণ্ঠ হইতে একটি শব্দও নির্গত হইল না। উপায় বুঝি করতলগত হইয়াও আবার ফিরিয়া যায়। হা ভগবান, শেষে কি সত্য সত্যই অপমৃত্যু লিখিয়াছিলে?

 কিছুক্ষণের জন্য সে যেন বাহ্যজ্ঞান শূন্য হইয়া গিয়াছিল। যখন হুঁস্ হইল, সে চাহিয়া দেখিল, একখানি ক্ষুদ্র জেলে-নৌকা তাহার অত্যন্ত নিকটে আসিয়া থামিয়াছে। নৌকারোহী মাঝিকে নৌকা ধরিবার হুকুম দিয়া জলের ভিতর নামিয়া দাঁড়াইয়াছে। ক্ষীণ চাঁদের আলোয় তাহার মুখ ভাল করিয়া দেখা যাইতেছিল না। অমিয়ার দৃষ্টির উপরেও কুয়াশার জাল বুনিয়া আসিতেছিল, তবু চাহিয়া সেই মুহূর্ত্তেই চিনিল—সে রণেন্দ্র। তাহার পর কি যে ঘটিল, কিছুই আর তাহার স্মরণ হয় না।

 ভাল করিয়া যখন জ্ঞান ফিরিয়া আসিল, সে অনুভব করিল, সে যেন কোথায় ভাসিয়া চলিয়াছে। চাহিয়া দেখিয়া বুঝিল, সে নৌকার উপর শয়ন করিয়া রহিয়াছে। বুড়া মাঝি তাহার মাথার কাছে বসিয়া ছিল—রণেন্দ্র হাল ধরিয়া আছে। অমিয়াকে উঠিয়া বসিতে দেখিয়া মাঝি আনন্দ প্রকাশ করিয়া কহিল—“ভাগ্যে আজ বাবুর ঝরণা