দেখ্তে যাওয়ার সখ হয়েছিল, নৈলে ত আমরা এ পথে কক্ষণই আস্তাম না। কেউ-ই আস্ত না! নদীতে ঢল নেমেচে, আমরা এসে না পড়লে এতক্ষণ মাঠাক্রুণকে কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে চলে যেত, আর কি খুঁজে পেতাম! আমি ত নৌকা ভিড়ুতেই চাইনি, বলি ওখানে কি আর এমন সময় মানুষ থাকে—থাকেন ত অপদেবতাই থাক্বেন। বাবু কেবল জোর করে নিয়ে এলেন।”
চাঁদ তিন ভাগ উঠিয়াছিল। নদীজলে চাঁদের আলো শোভা বিস্তার করিতেছিল। পরপারে দূরে পাহাড়ের অস্পষ্ট দৃশ্য গাছপালা নদীতীর অন্ধকারে বিস্তীর্ণ উচ্চাবচ স্তূপের ন্যায় দেখাইতেছিল। অমিয়ার জামা কাপড় সমস্তই জলে ভিজিয়া গিয়াছিল, শীতে কাঁপিতে কাঁপিতে সে সেই অন্ধকারের দিকেই চাহিয়া রহিল। এই মাত্র যাঁহার দয়ার ঋণে সে বদ্ধ হইয়া মরণের দ্বারপ্রান্ত হইতে ফিরিয়া আসিয়াছে, ইচ্ছাসত্ত্বেও তাঁহাকে একটা কৃতজ্ঞতার বাণীও সে জানাইতে পারিল না। তাহার শোচনীয় দুরবস্থার সাক্ষী এই মানুষটির করুণার দৃষ্টি কল্পনা করিতেও তাহার শীতার্ত্ত হৃদয় যেন শীতে জমিয়া আসিতেছিল। তবু সেই লজ্জার দুঃখের অভ্যন্তরে সুখের একটি অতি ক্ষীণ আনন্দের ধারাও বুঝি মৃদুভাবে বহিতেছিল—রণেন্দ্রই তাহাকে মৃত্যুর