পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
স্রোতের গতি

 খোকার অসুখের সময় তাহার সান্নিধ্য ছাড়িয়া দূরে দূরে থাকা অমিয়ার পক্ষে যে কতখানি কষ্টকর, তাহা সেই যে কেবল বুঝিতেছিল এমন নহে—মীনাও তাহা সর্ব্বান্তঃকরণে অনুভব করিতেছিল। তাই প্রথমে এদিকটা কেন ভাবিয়া দেখে নাই বলিয়া নিজেরই তাহার লজ্জা বোধ হইতেছিল। এক সময় কাজের ছুতায় বাহিরে গিয়া সে অমিয়াকে খোকার কাছে পাঠাইয়া দিল। এবং পরেও তাহাকে আর সে কাজে ছুটি দিল না; কহিল—“ছেলে নিয়ে আটকে বসে থাকলে কি আমার চলে ভাই? ও তোমার ছেলে তুমিই ওকে দেখ।”

 তৃষ্ণার্ত্তকে শীতল জলাশয় দেখাইয়া দিলে সে তাহার সান্নিধ্য ছাড়িয়া যাইতে চাহে না। অমিয়া তাহার স্নেহাধারের পার্শ্বে যে অচল আসন পাতিয়া বসিল, সেখান হইতে উঠিবার কথা তাহার যেন আর মনেই পড়িল না। নিতান্ত প্রয়োজন ব্যতীত সে একবারও স্বেচ্ছায় খোকাকে ছাড়িয়া যাইত না। ইহাতে প্রথম প্রথম রণেন্দ্রের কিছু অসুবিধা হইতেছিল। তবু সঙ্কোচ ঠেলিয়া অনেক সময়ই তাহাকে সেখানে উপস্থিত থাকিতে হইত। অমিয়ার গায়ে পড়িয়া সেবার ভার লওয়া প্রথম দৃষ্টিতে তাহার অপ্রীতি আনিয়াছিল। কিন্তু সেবিকা যে কতখানি আন্তরিকতার সহিত