পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৯৩

পাচ্চেন? হঠাৎ জ্বরটা ছাড়ায় অমন কাহিল হয়ে পড়েছে, ভয়ের কোন কারণই ত নেই?” বলিয়া সে বাহিরে না গিয়া, একখানা ডাক্তারী বই খুলিয়া জানালার ধারে দাঁড়াইয়া দেখিতে লাগিল। অমিয়া যে একান্ত নির্ভরে আজ তাহার কাছেই সাহায্য চাহিতেছে, ইহা সে মনে মনে বেশ বুঝিতেছিল। তবু আশ্চর্য্য এই—আজ আর সেই পুরুষ-বিদ্বেষিণী স্বাধীনতা প্রয়াসিনী অহঙ্কৃতা নারীর পরাজয়স্বীকারে বিজয়-গর্ব্ব অনুভবের পরিবর্ত্তে, সে যেন তাহার ব্যথার অংশটুকুই কেবল মনের ভিতর অনুভব করিতেছিল।

 খোকা যেমন আরোগ্যের পথে দ্রুত অগ্রসর হইতেছিল, রণেন্দ্রও সেই অনুপাতে নিজকে তাহার সঙ্গবিচ্যুত করিয়া লইতেছিল। এখন ডাকিয়া না পাঠাইলে সে আর বাড়ীর ভিতর প্রায় আসে না। আসিলেও মন খুলিয়া কাহারও সহিত কথা কহে না। মীনার সহিত যাহা লইয়া তাহার নিত্যকার বিবাদ ছিল, সেই পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব লইয়া এখন আর কোন তর্ক উঠে না। মীনা তুলিলেও সে এড়াইয়া যায়।

 সে যেন চেষ্টা করিয়া নিজেকে সুদূর গণ্ডীর ভিতর বদ্ধ করিয়া রাখিতেছিল। তবু মন যে তাহার স্বচ্ছন্দ নহে— তাহা গোপনতার প্রয়াসেই প্রকাশ হইতেছিল। অমিয়ার