পাতা:হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দশকরণের বানপ্রস্থ

 ‘কি রকম?’

 ‘সেদিন বাঘে একটা গরু মারলে। অবলা গরুর মৃত্যুযন্ত্রণা আর ক্ষুধার্ত বাঘের ভোজনসুখ দুই-ই বুঝলাম। গ্রামের লোকে মিলে কুঠারাঘাতে বাঘটা মারলে। অসহায় বাঘের আর্তনাদ আর দলবদ্ধ গ্রামবাসীর উল্লাস তাও বুঝলাম।’

 ‘ভাল মন্দ সবই তুমি নির্বিকার সাক্ষী হ’য়ে দেখ?’

 ‘তা কেন দেখব। বাঘটাকে প্রথম মার আমিই দিয়েছিলাম, মৃগয়া অভ্যাস ছিল কি না। আপনি অপক্ষপাতে ভাল মন্দ মিশিয়ে জগৎ সৃষ্টি করেছেন, আবার প্রবল স্বার্থবোধও দিয়েছেন। তাই বাঘে গরুমানুষ মারে, মানুষে বাঘ মারে, মানুষকেও মারে। যখন রাজা ছিলাম, তখন নিজের সুখটাই অগ্রগণ্য ছিল। তার পর সুখবৃদ্ধির নূতন উপায় মাথায় এল, আপনার বরে দশকায় দশমনা হলাম। নিজের দশটা অংশের স্বার্থসিদ্ধি তো সব সময় করা যায় না, তাই রফা করতে হ’ল। যথাসম্ভব সবকটাকে সুখে রাখবার চেষ্টা করতাম, না পারলে গোটাকতককে নিগৃহীত করতাম। তার পর স্বার্থবুদ্ধি আরও ব্যাপক হ’ল, বুঝলাম দশটা দেহমন যথেষ্ট নয়, একসঙ্গে জড়িয়ে থাকাও অনর্থকর, পৃথক্ থেকেও একত্ববোধ হয়। এখন কোটিকরণ হয়েছি, বিস্তর ইন্দ্রিয়, বিস্তর দেহমন। তাই মধ্যমপন্থা

১৫৯