পাতা:হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প

দেখিয়া বংশলোচন নিপুণ সারথির ন্যায় বলিলেন—‘কি যে বল তার ঠিক নেই। কিসের অভাব তোমার? হুকুম করলেই তো হয়।’

 মানিনী এইবার স্বামীর দিকে চাহিয়া বলিলেন— ‘বয়েস তো বেড়েই চলেছে, ধম্মকম্ম কিছুই হ’ল না।’

 বংশলোচন বলিলেন- ‘কেন, এই যে আর বৎসর গয়া কাশী বৃন্দাবন আগ্রা দিল্লি করে এলে?’

 ‘ভারী, তো, তার ফল আর কদিন টিকবে। ইচ্ছে হয় মন্তরটন্তর নি।’

 ‘তা বেশ তো, সে তো খুব ভাল কথা। আমি চাটুজ্যে মশায়ের সঙ্গে এখনই পরামর্শ করছি।’

 কিন্তু বংশলোচনের মন বলিতে লাগিল যে কথাটি মোটেই ভাল নয়। ইঁহাদের বাইশ বৎসর ব্যাপী দাম্পত্যজীবনে অসংখ্যবার প্রীতির শৃঙ্খল মেরামত করিতে হইয়াছে, কিন্তু বংশলোচনের প্রাধান্য এ পর্যন্ত মোটামুটি বজায় আছে। পত্নীর গুরুভক্তি যদি প্রবলা হইয়া ওঠে তবে স্বামীর আসন কোথায় থাকিবে? গুরু যদি কেবল অখণ্ডমণ্ডলাকারের পদটি দেখাইয়া দিয়া ক্ষান্ত হন তবে কোনও আপত্তির কারণ থাকে না। কিন্তু গুরু যদি নিজেই ঐ পদটি দখল করিয়া বসেন তবেই চিন্তার কথা মুশকিল এই যে, ধর্মের ব্যাপারে ঈর্ষা অভিমান শোভা পায় না।

৪২