পাতা:হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মহেশের মহাযাত্রা

মাবস্যার রাত্রি, তার ওপর আবার কুয়াশা। হরিনাথের দল কর্নওয়ালিস স্ট্রীট দিয়ে চললেন। গ্যাসের আলো মিটমিট করছে, পথে জনমানব নেই। কাঁধের বোঝা ক্রমেই ভারী বোধ হ’তে লাগল, হরিনাথ হাঁপিয়ে পড়লেন। বৈতরণী সমিতির সর্দার ত্রিলোচন পাকড়াশী বুঝিয়ে দিলেন এমন হয়েই থাকে, মানুষ ম’রে গেলে তার ওপর জননী বসুন্ধরার টান বাড়ে।

 হরিনাথ একলা নয়, তাঁর সঙ্গীরা সকলেই সেই শীতে গলদঘর্ম হয়ে উঠল। খাট নামিয়ে খানিক জিরিয়ে আবার যাত্রা।

 কিন্তু মহেশ মিত্তিরের ভার ক্রমশই বাড়ছে, পা আর এগয় না। পাকড়াশী বললেন ‘ঢর ঢের বয়েছি মশায়, এমন জগদ্দল মড়া কখনও কাঁধে করি নি। দেহটা তো শুকনো, লোহা খেতেন বুঝি? পনের টাকায় হবে না মশায়, আরও পাঁচ টাকা চাই।’

 হরিনাথ তাতেই রাজী, কিন্তু সকলে এমন কাবু হয়ে পড়েছে যে দু-পা গিয়ে আবার খাট নামাতে হ’ল। হরিনাথ ফুটপাথে এলিয়ে পড়লেন, বৈতরণীর তিন জন হাঁপাতে হাঁপাতে তামাক টানতে লাগল।

 ওঠবার উপক্রম করছেন এমন সময় হরিনাথের নক্তর পড়ল —কুয়াশার ভিতর দিয়ে একটা আবছায়া তাঁদের দিকে

৭১